মেহেরপুর থেকে খুলনার দিকে আজও বাস যাচ্ছে না, ভোগান্তিতে মানুষ

মেহেরপুর পৌর এলাকার সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা। সেখানে পুলিশ কিংবা ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের তৎপরতা চোখে পড়েনি
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে মেহেরপুর থেকে খুলনাগামী সব যাত্রীবাহী বাসের চলাচল আজ শনিবারও বন্ধ আছে। তবে দূরপাল্লার ও আঞ্চলিক পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক।

পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত যশোর–খুলনা রুটে বাস চলাচল করে। আল সানি ও আরএ পরিবহন নামের পরিবহন দুটি মূলত মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ হয়ে যশোর ও খুলনায় যাতায়াত করে। এই দুই পরিবহন ছাড়াও লোকাল বাস মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গা হয়ে দর্শনা, কালীগঞ্জের ভেতর দিয়ে যশোর ও খুলনায় যায়। নিষেধাজ্ঞা থাকায় লোকাল বাসও বন্ধ আছে।

পরিবহনশ্রমিক আজগর শেখ প্রথম আলোকে বলেন, খুলনার বাস মালিক, শ্রমিক ইউনিয়নের নিষেধ থাকায় খুলনা রুটে বাস চলাচল সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে আগামীকাল রোববার থেকে আবার বাস চলাচল করতে পারে বলেও তাঁরা আভাস পাচ্ছেন। পরিবহনশ্রমিকেরা দৈনিক দিনমজুরিতে চাকরি করেন। বাস এক দিন বন্ধ থাকলে স্বাভাবিক রোজগারে ভাটা পড়ে।

গাংনী উপজেলা শহরের বাসিন্দা সাজেমাল হোসেন এবং তাঁর স্ত্রী ও কন্যা, যাবেন যশোরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে। পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘লোকাল বাস বন্ধ, এ কারণে গাংনী থেকে ইজিবাইকে করে শহরে আসলাম। ঢাকাগামী দূরপাল্লার পরিবহনে ঝিনাইদহ পর্যন্ত যাওয়া যেত। কিন্তু ওই পরিবহনগুলো লোকাল যাত্রী নিচ্ছে না। কীভাবে যাব, এ নিয়ে এখন চিন্তায় পড়েছি।’

পৌর বাস টার্মিনালে নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন বাসচালক বলেন, ‍‘আমরা আওয়ামী লীগের কর্মী। কিন্তু চোখের সামনে অন্যায় হলেও কিছু বলা যাচ্ছে না। এভাবে তারা হুটহাট পরিবহন বন্ধ করে শ্রমিকদের পেটে লাথি মারছে। কিছু বলতে গেলে বিএনপির কর্মী বানিয়ে জেলজুলুম খাটাবে ও চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দেবে।’
আজ সকাল আটটার দিকে থেকে মেহেরপুর পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা। সেখানে পুলিশ কিংবা ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের তৎপরতা চোখে পড়েনি।

জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন বলেন, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সড়কে সড়কে প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে ভেবে জেলার বিএনপি নেতা-কর্মীদের দুই দিন আগেই খুলনায় পাঠানো হয়। গাংনী থেকে মাইক্রোবাসযোগে নেতারা বৃহস্পতিবার রাতেই খুলনায় পৌঁছেছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জেলা বিএনপির নেতারা মাইক্রোবাস নিয়ে খুলনায় পৌঁছান।

জেলা বাস শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, আগামীকাল থেকে খুলনাগামী পরিবহন চলতে পারে বলে বাস মালিক সমিতি থেকে জানানো হয়েছে।