ঘূর্ণিঝড় হামুন: এখনো বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে দুই উপজেলার লাখো মানুষ

হামুনের আঘাতে হেলে পড়া বিদ্যুতের খুঁটি এখনও ডোবায় পড়ে আছে। আজ বেলা ১১টায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার হরিনাফাঁড়ি এলাকায়
ছবি: এস এম হানিফ

ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে বেশি ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা ৭২ ঘণ্টা পার হলেও এখনো সংযোগ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ২ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ।

পল্লী বিদ্যুতের চকরিয়া ও পেকুয়া জোন কার্যালয় সূত্র জানায়, চকরিয়া পল্লী বিদ্যুতের ১১৮টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। হেলে পড়েছে ৭০টি খুঁটি। ২১টি ট্রান্সফরমার ভেঙে গেছে। নষ্ট হয়েছে ১ হাজার ১৪৫টি মিটার। ৮২০টি স্থানে সংযোগ তারের ওপর গাছ পড়েছে। পেকুয়া উপজেলায় ৮৫০ কিলোমিটার বিদ্যুৎ–সংযোগ তারের মধ্যে ৪৫৫ কিলোমিটার সংযোগ তার ছিঁড়ে গেছে। এ ছাড়া ১৭২টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে এবং ১২৭টি খুঁটি হেলে পড়েছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, টানা ৬৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় গ্রামের পর গ্রাম ঘুটঘুটে অন্ধকারে ডুবে আছে। অন্ধকারের কারণে চুরির হারও বেড়েছে।

হামুনের আঘাতে হেলে পড়া বিদ্যুতের খুঁটি এখনও ডোবায় পড়ে আছে। আজ বেলা ১১টায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার হরিনাফাঁড়ি এলাকায়
ছবি: এস এম হানিফ

পেকুয়া চৌমুহনীর বাসিন্দা রোমানা আকতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাড়ির তিনটি ফ্রিজের মাছ-মাংসসহ সবকিছু নষ্ট হয়ে পচে গেছে। বিদ্যুৎ লাইন চালু করতে এত সময় কেন লাগছে কে জানে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, চকরিয়ার খুটাখালী, ডুলাহাজারা, বরইতলী, হারবাং, সাহারবিল, কোনাখালী, পেকুয়ার চৌমুহনী, পেকুয়া বাজার, বারবাকিয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্টেশন ও বাজারে জেনারেটর চালু করে মানুষ মুঠোফোনে চার্জ দিচ্ছেন।

পেকুয়া উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) দীপন চৌধুরী বলেন, পেকুয়া উপজেলায় ৪২ হাজার গ্রাহক রয়েছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে শুধু উপজেলা লাইন চালুর চেষ্টা চলছে। এরপর অন্যান্য লাইন চালুর চেষ্টা করা হবে।

চকরিয়া পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ডিজিএম সাদিকুর রহমান বলেন, চকরিয়া পল্লী বিদ্যুতের লক্ষাধিক গ্রাহকের পুরো সংযোগ বন্ধ রয়েছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে কিছু কিছু সংযোগ সচল করার চেষ্টা চলছে।