নাটোরে ‘ভাই-বোন’ ও ‘স্বামী-স্ত্রী’র মনোনয়নপত্র জমা

নাটোর-১ আসনে ফারজানা শারমিন মনোনয়নপত্র জমা দেন। গতকাল সোমবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোরের দুটি আসনে একই পরিবারের একাধিক সদস্যের মনোনয়নপত্র দাখিল ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে ‘ভাই-বোন’ এবং নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনে ‘স্বামী-স্ত্রী’ প্রার্থিতা সামনে এসেছে।

নাটোর-১ আসনে ‘ভাই-বোন’ যাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁরা হলেন বিএনপির দলীয় প্রার্থী ফারজানা শারমিন (পুতুল) ও তাঁর সহোদর মোহাম্মদ ইয়াসির আরশাদ (রাজন)। তাঁরা দুজনই বিএনপির প্রয়াত প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ফজলুর রহমান (পটল)-এর সন্তান। অন্যদিকে নাটোর-২ আসনে যে ‘স্বামী-স্ত্রী’ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও দলীয় প্রার্থী এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার (দুলু) এবং তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (ছবি)।

নাটোর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে নাটোর-১ আসনের বিএনপি–দলীয় প্রার্থী ফারজানা শারমিন লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন। একই দিন বিকেলে তাঁর বড় ভাই মোহাম্মদ ইয়াসির আরশাদ একই কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁদের সঙ্গে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।

মনোনয়নপত্র জমাদান শেষে ফারজানা শারমিন উপস্থিত নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, লালপুর-বাগাতিপাড়ার উন্নয়নে যোগ্য বিবেচনা করেই দল তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি এ এলাকার প্রাণপুরুষ ফজলুর রহমানের (পটল) স্বপ্নপূরণে আমৃত্যু কাজ করে যাব। এ যাত্রায় আমার সঙ্গে যেমন এলাকার নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ আছেন, তেমনি পরিবারের অন্য সদস্যরাও রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সবাই ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবেন বলে আমি আশা করি।’

নাটোর-১ আসনে মোহাম্মদ ইয়াসির আরশাদ মনোনয়নপত্র জমা দেন। গতকাল সোমবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

মনোনয়নপত্র জমাদানের পর মোহাম্মদ ইয়াসির আরশাদ বলেন, ‘লালপুর-বাগাতিপাড়ার প্রতিটি প্রান্তে তাঁর বাবা ফজলুর রহমান পটলের উন্নয়নের ছোঁয়া রয়েছে। তাঁর আদর্শে যাঁরা উজ্জীবিত এবং বিগত সময়ে যাঁরা আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন, তাঁরা সবাই আমার সঙ্গে আছেন এবং থাকবেন।’

এ সম্পর্কে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘তাঁরা দুজন আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় প্রয়াত নেতা পটল ভাইয়ের সন্তান। তাঁদের প্রতি আমাদের শুভকামনা সব সময় আছে। কিন্তু রাজনীতির মাঠে আমাদের সবাইকে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। দল যেহেতু ফারজানা শারমিনকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা তাঁর সঙ্গে আছি। আশা করছি, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ইয়াসির আরশাদ দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবেন।’

রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন সাবিনা ইয়াসমিনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সাবিনা ইয়াসমিনও বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ বলেন, সাবিনা ইয়াসমিন জেলা বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। কৌশলগত কারণে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুই একক প্রার্থী হিসেবে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

মনোনয়নপত্র জমা দেন রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু
ছবি: প্রথম আলো

এদিকে নাটোর-২ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু রোববার দুপুরে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন। একই আসনে সোমবার বিকেলে তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের পক্ষ থেকেও মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়। তবে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।