সুন্দরবনের নদী থেকে ১৪ ফুট লম্বা মৃত অজগর উদ্ধার

সুন্দরবন
প্রথম আলো ফাইল ছবি

সুন্দরবনের শাকবাড়িয়া নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় একটি মৃত অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মৃত অজগরটি উদ্ধার করে বন বিভাগের শাকবাড়িয়া টহল ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন বনরক্ষীরা।

শাকবাড়িয়া টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে শাকবাড়িয়া নদীতে টহল দেওয়ার সময় মৃত অবস্থায় অজগরটিকে ভাসতে দেখা যায়। পরে এটিকে উদ্ধার করে টহল ফাঁড়িতে এনে মাটি চাপা দেওয়া হয়। অজগরটি ১৪ ফুট লম্বা, শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বার্ধক্যজনিত কারণে এটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

শাকবাড়িয়া নদীর এক পাশে সুন্দরবন, অন্য পাশে খুলনার কয়রা উপজেলার গড়িয়াবাড়ি গ্রাম। সেখানকার বাসিন্দা আবদুল হামিদ বলেন, তিনিসহ গ্রামের কয়েকজন জেলে ছয় দিন আগে সুন্দরবনে গিয়েছিলেন। শাকবাড়িয়া নদীর পাশে বনের বাইনতলা খালের পাড়ে একটি অজগর দেখেছিলেন তাঁরা। বাড়ি ফিরে বনে অজগর দেখার কথা বললে এলাকার অনেক মানুষ গিয়ে সাপটি দেখে আসেন। আজ সকালে শাকবাড়িয়া নদীতে মৃত অজগরটি ভাসতে দেখে খারাপ লাগছে তাঁর।

গড়িয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কওছার আলম বলেন, ‘বনের খালে অহরহ বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে অসাধু জেলের দল। মনে হয় বিষে আক্রান্ত মাছ খেয়ে অজগরটি মারা গেছে। বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরা বন্ধ না হলে কোনো প্রাণী আর জীবিত থাকবে না।’

সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, অজগর হলো পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সাপগুলোর একটি। সুন্দরবনে মাছ, ইঁদুর, ভোঁদড়, পাখি এমনকি আস্ত হরিণ শিকার করার নজির আছে অজগরের। সাধারণত তারা মানুষকে শিকারের উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে না। তবে আত্মরক্ষায় মানুষকে আক্রমণ করতে পারে। অজগর ধীরগতির ও অলসভাবে পড়ে থাকাতে দেখে অনেকেই ভুল করতে পারেন। প্রয়োজনে তারা মুহূর্তের মধ্যে আক্রমণ করে পেঁচিয়ে ফেলতে পারে। এ অঞ্চলে প্রায়শই সহজ শিকারের সন্ধানে অজগর লোকালয়েও চলে আসে।