ঈদে রংপুরের পথে থাকছে না বিশেষ ট্রেন

ঈদে রংপুরের যাত্রীদের জন্য বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ করা হয়নি। গতকাল রংপুর রেলস্টেশনেছবি: প্রথম আলো

ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আট জোড়া ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হলেও রংপুর বিভাগীয় শহরে ঈদে ঘরমুখী মানুষের জন্য কোনো বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ পায়নি। এর ফলে ঝামেলাহীন ও তুলনামূলক আরামদায়ক ট্রেনযাত্রার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ অঞ্চলের যাত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

রংপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, রংপুর এক্সপ্রেস আন্তনগর ট্রেন ঢাকা-রংপুর চলাচল করছে। তা–ও আবার দিনে একবার। রংপুর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এই ট্রেনটিই আবার ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল নয়টায় রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। কোচ সংখ্যাও অপ্রতুল। ১৪টি বগি নিয়ে চলাচল করে। তবে ঈদের কয়েক দিন আগে বিশেষভাবে তিনটি বগি যুক্ত করে প্রায় ১৩৩টি আসন বাড়ানোর কথা থাকলেও এখনো সে সিদ্ধান্ত হয়নি। আরেকটি ট্রেন কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে আটটায় রংপুর রেলস্টেশনের ওপর দিয়ে চলাচল করে।

ঈদ উপলক্ষে রংপুরে একটি বিশেষ ট্রেন চালুর দাবি জানিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রংপুর বিভাগীয় শহর হওয়ার পরও ঈদে বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ পায়নি। রংপুর সব সময় বৈষম্যের শিকার। এখনো সময় আছে এ অঞ্চলে ঈদে একটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হোক।

পশ্চিমাঞ্চল রেলের লালমনিরহাট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট বিভাগ থেকে ১০ জোড়া অর্থাৎ ২০টি আন্তনগর ট্রেন ঢাকায় যাতায়াত করে। এগুলো হচ্ছে রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, বুড়িমারী এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা, দ্রুতযান, দোলনচাঁপা, করতোয়া এক্সপ্রেস ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস। প্রতিদিন এসব ট্রেনে ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন।

ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রীর সংখ্যা দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যায়। যাত্রীদের চাপ কমাতে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বরাদ্দের বেলায় রংপুর বরাবরই উপেক্ষিত। রাজধানী ঢাকা থেকে ঈদ করতে ঘরে ফেরা রংপুর বিভাগের মানুষের সংখ্যাই বেশি। বিশেষ করে পোশাকশ্রমিকদের একটি বড় অংশই রংপুর বিভাগের বাসিন্দা। যাঁরা প্রতিবছর ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার পথে অসহনীয় ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বলেন, ‘বিগত সময়ে রেলের উন্নয়ন নিয়ে অনেক পরিকল্পনা দেখানো হয়েছে। কিন্তু তা এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। এ অঞ্চলের হাজারো মানুষ ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করছেন। কিন্তু তাঁদের যাতায়াতের জন্য কোনো বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ নেই। ঈদ উপলক্ষে রংপুরে বিশেষ ট্রেন বরাদ্দের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

রেলওয়ে স্টেশনের তত্ত্বাবধায়ক শংকর গাঙ্গুলী বলেন, দেশের অন্যান্য অনেক জেলায় ঈদের আট জোড়া বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ হলেও রংপুরে বরাদ্দ মেলেনি। তবে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি নতুন চালু হওয়ায় যাত্রীদের জন্য অনেক সুবিধা হবে।