গাজীপুরে বাসচাপায় নিরাপত্তাকর্মী নিহত, চারটি বাসে অগ্নিসংযোগ
গাজীপুর মহানগরীর তারগাছ এলাকায় বাসচাপায় একজনের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার রাতে স্থানীয় জনতা চারটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ঘটনার পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় দিকে যানাবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই মহাসড়কে চলাচলকারীরা।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. মোন্নাফ আলী (৫০)। তিনি ঝিনাইদহ সদর এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, তারগাছ এলাকায় অনন্ত নামের স্থানীয় একটি পোশাক তৈরি কারখানায় নিরাপত্তার কাজ করেন মোন্নাফ। শনিবার রাত আটটার দিকে দায়িত্ব পালন শেষে কারখানা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অতিক্রম করার সময় আজমেরী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তাঁকে চাপা দেয়। এতে তিনি গুরুতর জখম হন। পরে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
আশপাশের উত্তেজিত জনতা বাসটিকে আটক করে অগ্নিসংযোগ করেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে আশপাশের কারখানার শ্রমিকেরা মিলে আজমেরী পরিবহনের আরও তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুই পাশেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বাসের আগুনের খবর পেয়ে টঙ্গী ও গাজীপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে উত্তেজিত জনতা তাঁদের বাধা দেন।
গাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা কামাল বলেন, বাসচাপায় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন আজমেরী পরিবহনের চারটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘বাসে আগুন দেওয়ার খবরে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। ফায়ার সার্ভিস পানি দেবে, এ সময় জনগণ হামলা চালায়। তাই ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। আমরা শুনেছি দু–তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।’
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. ইব্রাহিম খান বলেন, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মহানগরীর তারগাছ এলাকায় স্থানীয় অনন্ত ক্যাজুয়াল গার্মেন্টসের এক নিরাপত্তাকর্মী মহাসড়ক অতিক্রম করছিলেন। এ সময় গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী আজমেরী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ওই নিরাপত্তাকর্মীকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে উত্তেজিত শ্রমিকেরা ওই বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।