‘বাসে উঠে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, হেলপার গায়ে হাত দেয়’

ভিড় ঠেলে গণপরিবহনে ওঠা রীতিমতো যুদ্ধ জয়ের মতো নারী যাত্রীদের কাছে। গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায়ছবি: জুয়েল শীল

‘সকালের দিকে বাসগুলো মেয়েদের তুলতেই চায় না। বাইরে থেকে দেখতে পাই, মেয়েদের জায়গায় ছেলেরা বসে আছে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হয়তো একটা বাসে উঠতে পারি। বাসে ওঠার সময় দরজায় দাঁড়ানো হেলপার গায়ে হাত দেয়। চাকরি করার চেয়ে যাতায়াত করার কষ্টই বেশি।’

চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার এলাকার একটি বিউটি পারলারের (রূপচর্চাকেন্দ্র) কর্মচারী জান্নাতুল (ছদ্মনাম) এভাবেই নিজের গণপরিবহন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা জানালেন। প্রতিদিন সকালে ষোলশহর এলাকা থেকে ২ বা ১০ নম্বর বাসে করে কর্মস্থলে যাতায়াত করেন তিনি। বেশ কয়েকবার বাসের মধ্যে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন বলেও জানান এই নারী।

চট্টগ্রাম নগরে গণপরিবহন হিসেবে বাস, হিউম্যান হলার ও ছোট টেম্পোতে যাতায়াত করেন বেশির ভাগ মানুষ। এ ছাড়া রয়েছে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। তবে সেগুলোতে খরচ তুলনামূলক বেশি। নগরের বিভিন্ন রুটে চলাচল করা বাসগুলোর বেশির ভাগই মিনিবাস। বর্তমানে চট্টগ্রামে নারী-পুরুষের সংখ্যার অনুপাত প্রায় সমান। বেড়েছে কর্মজীবী নারীর সংখ্যাও। কিন্তু গণপরিবহনে নারীদের সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা বাড়েনি। এ–বিষয়ক আইন থাকলেও তার কার্যকারিতা নেই।

সরেজমিনে নগরের বেশ কিছু বাস ঘুরে দেখা গেল, বেশির ভাগ বাসে সংরক্ষিত আসন হিসেবে নারীদের বসার জন্য বরাদ্দ রাখা হয় একটি বা দুটি সরু বেঞ্চ, যা আর পাঁচটি সাধারণ আসনের মতো কোনো চেয়ার নয়। সামনের দিকে দরজার পাশে এসব বেঞ্চে চার-পাঁচ নারী হয়তো বসে যেতে পারবেন। কোথাও কোথাও ইঞ্জিনের ওপর এই বসার ব্যবস্থা করা হয়। চালকের আসনের পাশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জায়গাটি উচ্চতায় ও প্রস্থে হয় অতি সংক্ষিপ্ত। জানালার সামনে এমনভাবে বসার ব্যবস্থা করা হয় যে কোনো নারী অসাবধানতাবশত পেছনে হেলান দিতে গেলে জানালা দিয়ে বাইরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাসে থাকা নারী যাত্রীদের অভিযোগ, তিনজনের জায়গায় গাদাগাদি করে চার-পাঁচজন বসান হেলপাররা। আবার সাধারণ আসনে বসতে গেলে বাসের চালক বা পুরুষ যাত্রীরা খারাপ ব্যবহার করেন।

ভিড় ঠেলে গণপরিবহনে ওঠা রীতিমতো যুদ্ধ জয়ের মতো নারী যাত্রীদের কাছে। গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায়
ছবি: জুয়েল শীল

গণপরিবহনে অস্বস্তি, অনিরাপত্তা

নগরের গোলপাহাড় এলাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী রক্সি দেব। নিউমার্কেট এলাকা থেকে নিয়মিত ৩ নম্বর বাসে যাওয়া-আসা করেন তিনি। রক্সি দেব বলেন, ‘সংরক্ষিত আসনের দিকে এত কম জায়গা থাকে যে পিঠ সোজা করে বসা যায় না। জানালার সামনে নারীদের এই আসন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বাইরে থেকে হাত দিয়ে আমার ফোন ছিনতাই করে নেয় গত বছর। এর আগে জানালার বাইরে থেকে নারীদের ব্যাগ টান দেওয়ায় দুর্ঘটনাও ঘটেছে। অনেক সময় আগে থেকে পুরুষেরা সংরক্ষিত আসনের ভেতরের দিকে বসে থাকেন। পরে বাস ভর্তি হয়ে গেলে জায়গা নেই—দোহাই দিয়ে আর ওঠাতে চান না। এ ছাড়া ইঞ্জিনের দিকে নারীদের আসনগুলো প্রচণ্ড গরম হয়ে থাকে। বসতে কষ্ট হয়।’

২০১৯ সালের শুধু ডিসেম্বর মাসেই চট্টগ্রাম নগরের গণপরিবহনে পাঁচটি যৌন হয়রানির ঘটনা বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। এরপরও বিভিন্ন সময়ে নগরের বাসে নারী যাত্রী বা শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার ঘটনা ঘটেছে। বলা বাহুল্য, এসব তথ্যের মধ্যে বড় একটি অংশই উঠে আসেনি। পরিস্থিতির শিকার নারীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নীরব থাকেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটি জানিয়েছে, গণপরিবহনে প্রতি ১০০ নারীর মধ্যে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন ৯৯ জন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী দিবাশ্রী বড়ুয়া বলেন, ‘সংরক্ষিত আসনগুলো সাধারণ আসনের জায়গায় করা উচিত। কারণ, চালকের পাশের আসনে বসলে পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ যাত্রীরা গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন। মেয়েরা দাঁড়িয়ে থাকলে ইচ্ছাকৃতভাবে গায়ে হেলে পড়েন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করা হয় বেশি। কারণ, তারা ছোট, ভয় পাবে, কিছু বলবে না। আমার ছোট বোনের সঙ্গেও একবার এমন ঘটেছে। পরে তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। মেয়েদের ওঠা–নামার সময়ও ঠিকমতো বাস থামানো হয় না। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েক মেয়ের সঙ্গেও চলন্ত বাসে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। গণপরিবহনে যাতায়াত করা নারী ও শিশুদের জন্য খুবই অনিরাপদ।’

সংরক্ষিত আসনের আইনের বিষয়ে জানেন না নারীরা

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গণপরিবহনে ৩০ শতাংশ নারী আসন সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব করা হয়। তবে বাসে ৯টি আসনের বরাদ্দ নিয়ে শুরু হয় নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের সংরক্ষিত আসনের যাত্রা। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮–এর ৯২ (২) ধারা অনুযায়ী যদি সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসেন, তাহলে এক মাসের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আইনগুলো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় অন্যান্য অনিয়মের মধ্যে ধরা হয়। তবে যাত্রীরা এ আইনের বিষয়ে সচেতন না বলেও জানান তাঁরা। বিআরটিএ চট্টমেট্রো সার্কেল ২–এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিসকাতুল তামান্না বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় সংরক্ষিত আসনগুলোতে যাতে নারী ও শিশুরা বসতে পারেন, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন করেন তাঁরা।

যদিও বাসে ভ্রমণরত যাত্রীদের অধিকাংশই জানান, এ ধরনের আইন আছে বলে জানেন না তাঁরা। বরং যাত্রী ও চালকেরা মনে করেন, সংরক্ষিত আসন মেয়েদের আসন। আর বাকি সব আসন ছেলেদের।

ভিড় ঠেলে গণপরিবহনে ওঠা রীতিমতো যুদ্ধ জয়ের মতো নারী যাত্রীদের কাছে। গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায়
ছবি: জুয়েল শীল

পরিবেশ অস্বস্তিকর, মনে করেন ৬০ শতাংশ নারী

চট্টগ্রাম নগরের গণপরিবহন ব্যবহারকারী নারীর সংখ্যা, তাদের নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্যগত বিষয়সংক্রান্ত কোনো জরিপ বা পরিসংখ্যান নেই। নগরের গণপরিবহনব্যবস্থা নিয়ে ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘ইজেন কনসালট্যান্ট লিমিটেড’ নামের একটি পরামর্শক সংগঠন এক বছরব্যাপী একটি জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। সে সময় নগরের মাত্র ৬১৬ নারীর ওপর একটি জরিপ চালানো হয়। এ জরিপে দেখা যায়, ৬০ শতাংশ নারী মনে করেন, গণপরিবহনগুলোর পরিবেশ অস্বস্তিকর। ১৯ শতাংশ মনে করেন, গণপরিবহন নারীর জন্য অনিরাপদ। ৬ শতাংশ নারী জানান, চালক বা হেলপাররা বাসে নারী যাত্রী তুলতে চান না। অপর ৬ শতাংশ মনে করেন, বয়স্ক, অসুস্থ বা বাচ্চাদের নিয়ে যাত্রা করার ক্ষেত্রে গণপরিবহন উপযুক্ত নয়। ফলে চট্টগ্রাম নগরে অটোরিকশা বা রিকশায় যাতায়াত করা নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে বেশি।

ওই জরিপেই দেখানো হয়, নগরের প্রতি ১০০ নারীর মধ্যে বাস বা বড় টেম্পোতে যাতায়াত করেন ৫৪ জন। আর সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা বা ছোট টেম্পোতে যাতায়াত করেন ৩৫ নারী। অন্যরা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে বাস বা বড় টেম্পো ব্যবহারের সংখ্যা প্রতি ১০০ জনে ৭৬ জন। আর সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা বা ছোট টেম্পোতে যাতায়াত করেন ১৮ পুরুষ।

চট্টগ্রাম নগরে আয় বা কর্মসংস্থানের দিক থেকে পুরুষেরা এগিয়ে থাকলেও পরিবহনের ক্ষেত্রে নারীদের খরচ তুলনামূলক বেশি। গণপরিবহনে পর্যাপ্ত সেবা না পাওয়ার কারণে নারীরা তাঁদের দৈনিক যাতায়াতে অধিক ভাড়ার যানবাহন বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

২০২২ সালে দেশের ৮ বিভাগের ২৪ জেলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং আওয়ামী লীগের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) উদ্যোগে এক যৌথ জরিপ চালানো হয়। এতে অংশ নেন ৫ হাজার ১৮৭ নারী। তাঁদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ নারী জানান, তাঁরা গণপরিবহনে অযাচিত স্পর্শ-ধাক্কা-বাজে মন্তব্যের শিকার।

একাধিকবার নিগ্রহের শিকার হওয়ার কথা জানান ৬৬ শতাংশ নারী। বিকেলের দিকে গণপরিবহনে হয়রানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে বলে জানান নারীরা।

ভিড় ঠেলে গণপরিবহনে ওঠা রীতিমতো যুদ্ধ জয়ের মতো নারী যাত্রীদের কাছে। গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায়
ছবি: জুয়েল শীল

স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি

বাসে নারীদের বসার জন্য যে জায়গা বরাদ্দ রাখা হয়, তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাহেনা আক্তার। তিনি বলেন, এ রকম আসনে অস্বস্তিকরভাবে বসে দীর্ঘ যাত্রা যেকোনো মানুষের জন্যই স্বাস্থ্যগত সমস্যা তৈরি করতে পারে। জায়গা ছোট হওয়া ও চাপাচাপি করে বসে নিয়মিত যাতায়াত করার ফলে মেরুদণ্ড, মাংসপেশি, কোমর বা হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া নারীদের ঋতুস্রাব চলাকালে বা গর্ভাবস্থায় ইঞ্জিনের ওপর গরম আসনে বসার ফলে অধিক রক্তক্ষরণ, তলপেটে ব্যথা বা অস্বস্তির সৃষ্টি হতে পারে। এখন নগরে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। চারটি বা পাঁচটি আসন বরাদ্দ রেখে নারীদের চলাচল নিরাপদ ভাবার দিন এখন আর নেই। তাঁদের জন্য এখন আলাদা গণপরিবহন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন সাহেনা আক্তার।

চট্টগ্রাম জেলা নারী সংহতি সংগঠনের আহ্বায়ক নুরুন নেসা মুন্নি বলেন, ‘গণপরিবহনে যখন নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন চালু করা হয়, তখনকার তুলনায় এখন চট্টগ্রামে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এখন গণপরিবহনগুলোতে ৩০-৩৫ শতাংশই থাকেন নারী যাত্রী। কিন্তু অধিকাংশ বাসেই আইন অনুযায়ী আটটি আসন পুরোপুরি পান না নারী যাত্রীরা। এই আসনগুলোতেও পুরুষেরা বসে থাকেন। ফলে জায়গা নেই বলে অনেক সময় নারীদের বাসে উঠতেই দেন না হেলপাররা। গণপরিবহনে সংরক্ষিত আসনের যে সুবিধা নারীর জন্য রাখা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। কিন্তু সেই কমটুকুও তারা পুরোপুরি পাচ্ছেন না।’

নারীদের জন্য আলাদা গণপরিবহন নেই

২০০৬ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী নগরে নারী ও শিশুদের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘবে বিশেষায়িত সিটি বাস সেবা চালু করেন। সে সময় করপোরেশনের তহবিল থেকে ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০০৬ ও ২০০৯ সালে দুই দফায় ১৯টি বাস কেনা হয়। প্রথমে কেবল নারী ও শিশুদের জন্য বাসগুলো চালু করা হলেও পরে এই সেবা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে লোকসান দেখিয়ে এই সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০১১ সালের ৩ মার্চ থেকে বর্তমান মেয়র মঞ্জুর আলম নগরে ‘মা ও শিশুর নিরাপদ বাহন’ ও ‘সিটি টুর সার্ভিস’ পুনরায় চালু করেন। অলাভজনক হওয়ার পরও মা ও শিশুর নিরাপদ বাহনের একটি বাস বর্তমানে চালু আছে।

তবে নানা কারণে মাঝেমধ্যে বাসটি বন্ধ থাকে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, নারীদের জন্য চালু হওয়া গণপরিবহনগুলোতে যাত্রী হয় না, ফাঁকা থাকে—এমন অভিযোগ তুলে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এখন কিন্তু চট্টগ্রামের গার্মেন্টস, কারখানা ছাড়াও নারী কর্মজীবী বা নারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিদ্যালয়ে পড়া বাচ্চাদের নিয়ে যাতায়াত করেন নারী অভিভাবকেরা। অফিস টাইমে নারীদের জন্য বিশেষায়িত গণপরিবহন চালু করা উচিত। পাশাপাশি সাধারণ গণপরিবহনে নারীদের সংরক্ষিত আসন বাড়ানো এবং সেগুলো নিশ্চিত করতে তদারকি প্রয়োজন। সড়কে নারীদের চলাচল নিরাপদ করার এ দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নগরের যানজট নিরসন ও যান চলাচলের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সিটি করপোরেশন ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে মিলে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে নারীদের জন্য আলাদা গণপরিবহন চালুর বিষয়ে এ মুহূর্তে সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনা নেই। আর বিদ্যমান গণপরিবহনে যাতে নারীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারে, সে জন্য পরিবহনমালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে সিটি করপোরেশন সভা করবে।