সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরে ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকা ডুবে নিখোঁজ দুই ব্যক্তির মধ্যে শাহ আলমের (৫০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মাটিয়ান হাওর থেকে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। তবে এখনো নিখোঁজ আবুল ফয়েজ (৪৮)। তাঁর সন্ধান চলছে।
তাহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, আজ সকাল থেকে কয়েকটি নৌকা নিয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন নিখোঁজ শাহ আলম ও ফয়েজের সন্ধান করছিলেন হাওরে। দুপুরে শাহ আলমের লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে ফয়েজ এখনো নিখোঁজ।
এ দুজনের বাড়ি উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকার চিলান তাহিরপুর গ্রামে। দুজনই কৃষক।
উপজেলার মাটিয়ান হাওরে গত রোববার সন্ধ্যায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। তখন ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি ছিল। নিখোঁজের পর রোববার রাতে কিছু সময় এবং সোমবার দিনভর হাওরে সন্ধান করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। আজ সকাল সাতটায় আবার তাঁদের সন্ধানে কাজ শুরু করেন পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় লোকজন। পরে দুপুরে একজনের লাশ পাওয়া যায়।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চিলান তাহিরপুর গ্রামটি টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের কাছে। উপজেলা সদর থেকে নৌকায় মাটিয়ান হাওর পাড়ি দিয়ে ওই গ্রামে যেতে হয়। সময় লাগে দেড় ঘণ্টার মতো। রোববার বিকেলে শাহ আলমের বড় ছেলে আকাশ মিয়ার (১৫) ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। তাই একটি ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে আকাশকে উপজেলা সদরে নিয়ে আসেন বাবা শাহ আলম ও প্রতিবেশী আবুল ফয়েজ। সেখান থেকে আকাশ মিয়াকে সুনামগঞ্জের গাড়িতে তুলে দিয়ে তাঁরা দুজন আবার নৌকা নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পথে শুরু হয় ঝড়বৃষ্টি। মাটিয়ান হাওরে তখন প্রচণ্ড ঢেউ ওঠে। একপর্যায়ে নৌকাটি হাওরে ডুবে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে শাহ আলমের চাচাতো ভাই আবদুল হালিম জানান, পাশাপাশি তিনটি নৌকা ছিল তখন। এর মধ্যে মাটিয়ান হাওরে গিয়ে একটি ডুবে যায়। কিন্তু প্রচণ্ড ঝড়ের কারণে অন্য দুটি নৌকার লোকজন কোনোরকমে তাঁদের নৌকাগুলো নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। এ দুজনকে উদ্ধার করার কোনো সুযোগ পাননি তাঁরা। ঝড় থামার পর রাতে লোকজন গিয়ে ঘটনাস্থলে খোঁজ করেছেন, কিন্তু তাঁদের পাননি।