পটুয়াখালীতে জামায়াতপন্থী আইনজীবীর মামলায় জামিন পেলেন বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবী
পটুয়াখালীতে জামায়াতপন্থী আইনজীবীর মামলায় এপিপিসহ বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে তাঁরা জামিনের আবেদন করলে বিচারক মো. আশিকুর রহমান আপসের শর্তে তাঁদের জামিন দেন।
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে হামলার ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে সদর থানায় মামলাটি করা হয়। এই মামলা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিন সিকদার। তিনি পটুয়াখালী ল ইয়ার্স কাউন্সিলের নির্বাচন পরিচালনার কমিটির আহ্বায়ক এবং জামায়াত আইনজীবী ফোরামের পটুয়াখালী শাখার সদস্য।
মামলার এজাহারে বাদী বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির-২০২৫-২৬ কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম ক্রয়, জমা ও টাকা দাখিলের দিন ধার্য ছিল। ওই দিন সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ একাধিক পদের ফরম ক্রয় ও জমা দিতে জামায়াতে ইসলামী প্যানেলের আইনজীবীরা সমিতির কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এ সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা ফরম কিনতে বাধা দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে জামায়াত প্যানেলের আইনজীবীদের মারাত্মক জখম করেন। ওই হামলায় বাদী রুহুল আমিন সিকদার, জেলা জামায়াতের আমির আইনজীবী নাজমুল আহসানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে বাদীকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই দিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
আসামিদের জামিন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাদী রুহুল আমিন বলেন, আজ তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাই বাইরের খোঁজখবর তেমন নিতে পারছেন না। দলীয় জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীরা বিষয়টি জানতে পারেন।
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি এ টি এম মোজাম্মেল হোসেন ১১ আইনজীবীর জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতেই পারে, সে জন্য আইনজীবীদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার হওয়াটা দুঃখজনক এবং অতি উৎসাহী কাজ। নিজেরা বসে এটা সমাধান করব।’
জামিন পাওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন পটুয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি শরীফ মো. সালাহউদ্দিন (৫০), জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো. মাহবুবুর রহমান সুজন (৩৯), মো. মিজানুর রহমান (৪৮), এস এম তৌফিক হোসেন (৪১), মো. আরিফ হোসেন (৪৫), মো. সাহাবুদ্দিন (৪৪), মো. আরিফুর রহমান (৪৪), মো. নাজমুল আহসান (৪৮), মো. মজিবুল হক বিশ্বাস রানা (৪২), মো. আবু জাফর খান (৫০) ও মো. ইমরান হোসেন (৪০)। তাঁরা সবাই বিএনপিপন্থী আইনজীবী। এজাহারে আরও ৩৫ থেকে ৪০ জন অজ্ঞাতনামা বহিরাগতকে আসামি করা হয়।