মনিরামপুরে সালিসে এক গৃহবধূকে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ

যশোরের মনিরামপুরে সালিস বৈঠকে গৃহবধূকে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার উপজেলার বড় চেতলা দশানী গ্রামে
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

যশোরের মনিরামপুরে সালিস বৈঠকে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার উপজেলার বড় চেতলা দশানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁর স্বামী ১৭ বছর ধরে মালয়েশিয়াপ্রবাসী। তিনি এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বড় চেতলা দশানী গ্রামে বসবাস করেন। শনিবার বিকেল চারটায় দিকে বড় চেতলা দশানী বাজারের শাজাহান কবিরের দোকানে ১৫০ টাকা ফ্লেক্সিলোড দিতে তাঁর ছেলেকে পাঠান। ফ্লেক্সিলোডের টাকা মুঠোফোনে না আসায় পরে তাঁর ছেলেকে আরও দুবার পাঠান ওই দোকানে। তারপরও টাকা না আসায় ওই নারী নিজেই শাজাহানের দোকানে গেলে টাকা গেছে জানিয়ে শাজাহান তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তখন ওই নারীও দোকানির সঙ্গে তর্কে জড়ান।

এরপর ওই দোকানের সামনে সালিস হবে বলে শাজাহান, তাঁর ছেলে হৃদয়সহ কয়েকজন ওই নারীকে বাড়ি থেকে আসতে বলেন। তিনি রাজি না হলে তাঁকে টেনে ওই দোকানের সামনে নিয়ে আসেন তাঁরা। সালিস বৈঠকের এক পর্যায়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে মারপিট করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত অনেকেই ওই নারীকে মারপিট করেন।

এ মারপিটের ঘটনার ভিডিও পরে ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারীকে লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করা হচ্ছে। মারপিট অনেকেই অংশগ্রহণ করছেন আর ওই নারী আর্তচিৎকার করে তাঁকে না মারার জন্য অনুরোধ করছেন।

সালিস বৈঠকের এক পর্যায়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে মারপিট করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত অনেকেই ওই নারীকে মারপিট করেন।

ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে শাজাহান, তাঁর ছেলে হৃদয়, মনসুর সরদার ও নজরুল সরদার মিলে বেদম মারপিট করেন। তাঁকে লাঠি ও জুতা দিয়ে মারপিট করা হয়, কিল–ঘুষি মারা হয়। তাঁর আর্তচিৎকারেও কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। পরে এই মারপিটের সঙ্গে আরও পাঁচ-ছয়জন যোগ দেন ও শ্লীলতাহানি করেন। তিনি চারজনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে গত সোমবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছেও দিয়েছেন তিনি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শাজাহান কবির বলেন, মারপিটের সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। ওই নারী অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করলে এলাকার নারীরাই তাঁকে মারধর করেন। এ সময় তাঁর ছেলেও উপস্থিত ছিলেন না বলে তাঁর দাবি।

এ ব্যাপারে মনিরামপুরের ইউএনও জাকির হোসেন বলেন, ওই নারীর একটি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগটি থানায় পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে মামলা হবে।