কুড়িগ্রামে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন, বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ৪২০ পরিবার

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের পর কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী। রোববার সকালে
ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় আট কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) ও টেকনিশিয়ান জাহিদুল ইসলাম। এ ঘটনার পর ওই এলাকার ৪২০টি পরিবারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে প্রচণ্ড গরম থাকায় রাত দুইটা পর্যন্ত বিদ্যুতের সংযোগ চালু রেখেছিলেন। আজ সকালে এলাকাবাসীর চিৎকার শুনে উঠে দেখেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাটারি রাখার ঘরের ওপর কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী। পরে তিনি দ্রুত সৌর প্যানেলগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এতে ৯০০ সৌর প্যানেল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। তবে এর আগেই ২৮৮টি ব্যাটারি, ১৯টি অফগ্রিড ইনভার্টার, ৮টি অনগ্রিড ইনভার্টার পুড়ে যায়। যার বাজারমূল্য প্রায় আট কোটি টাকা।

সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রটির সব কটি লিথিয়ামের ব্যাটারি। পাওয়ার আপ–ডাউনের ত্রুটির কারণে আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এলাকাবাসী ও সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ব্যাটারি রাখার ঘর থেকে কালো ধোঁয়া উড়তে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে কালো ধোঁয়ায় পুরো এলাকা ছেয়ে যায়। এ সময় প্রকল্প ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম পাশের একটি কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। স্থানীয় লোকজনের চেঁচামেচিতে তাঁর ঘুম ভেঙে গেলে তিনি আগুন দেখে দ্রুত সৌর প্যানেলের ব্যাটারির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এতে ৯০০ সৌর প্যানেল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। পরে এলাকাবাসীর যৌথ চেষ্টায় এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জ্বালানি ব্যয় কমাতে ২০১৮ সালে উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের কোদালকাটি গ্রামে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) অর্থায়নে ‘কানেকশিয়া সোলার মিনিগ্রিড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ওই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করে। কেন্দ্রটি ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে ওই এলাকার ৪২০টি পরিবারে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমীন মাস্টার বলেন, সকাল সাড়ে আটটার দিকে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাটারি রাখার ঘরে প্রথমে ধোঁয়া উঠতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কালো ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে চারদিকে অন্ধকার করে ফেলে। স্থানীয় লোকজনের চেষ্টায় এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাজু মিয়া নামের একজন শ্রমিক বলেন, ‘সকালবেলা কাজের জন্য ওই স্টেশনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পাই। পরে সবাইকে ডাকাডাকি করলে এলাকাবাসী এসে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’

কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু বলেন, সকালে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাঁর ইউনিয়নের ৪২০টি পরিবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।