মুন্সিগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

আদালতের রায়
প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মো. খোকন (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফাইজুন্নেসা এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খোকন সিরাজদিখান উপজেলার মো. বাবুলের ছেলে। তিনি শ্রীনগরের একটি বাজারে কাপড় সেলাইয়ের দোকানে ব্যবসা করতেন। নিহত কিশোরী শ্রীনগরের স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট বিকেলে জামা কেনার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের শ্রীনগরের ওই বাজারে গিয়ে নিখোঁজ হয় কিশোরী। নিখোঁজের তিন দিন পর মো. খোকনের দোকানের নিচে ইছামতী নদীর পাড়ে বস্তাবন্দী অবস্থায় কিশোরীর লাশ পাওয়া যায়। সে দিনই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় মামলা করেন। পরদিন ওই কাপড় সেলাইয়ের দোকানে রক্তের ছোপ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি কিশোরীর পরিবারকে জানান। পরে পরিবার পুলিশকে জানালে পুলিশ খোকনকে গ্রেপ্তার করে।

রায় ঘোষণার পর মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী লাভলু মোল্লা বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন খোকন। মামলায় ২০ জন সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি খোকনকে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে লাশ গুম করার অপরাধে আরও ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন। এ রায়ে বাদীপক্ষের সন্তোষের কথা জানান তিনি।

নিহত কিশোরীর বড় ভাই বলেন, ‘আমার বোন ঘটনার দিন আমাদের বাড়ির পাশের বাজারের খোকনের টেইলার্সের দোকানে কাপড় বানাতে গিয়েছিল। তখন খোকন আমার বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে। আমার ছোট বোনটা পরিবারের সবার প্রিয় ছিল। ওর শোকে মামলার বাদী আমার বাবা ঘটনার তিন বছর পর মারা গেছেন। আমার দাদাও বাবার শোকে মারা যান। আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায়ে পরিবারের সবাই খুশি হয়েছি।’

আসামি খোকন গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে ছিলেন। আজ মামলার রায় ঘোষণার সময় তাঁকে আদালতে আনা হয়। রায় শুনে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মুন্সিগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন বলেন, রায়ের পর আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।