রংপুর মেডিকেলের বার্ন ওয়ার্ডের এসিতে আগুন, রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক

বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ড্রেসিং রুমের এসিতে আগুন লাগে
ছবি: প্রথম আলো

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে (এসি) আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীদের ওই ইউনিয়ন সরিয়ে নেওয়া হয়। আজ বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রথম আলোকে জানান হাসপাতালের পরিচালক ইউনুছ আলী।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈদ্যুতিক সার্কিটের কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ড্রেসিং রুমের এসিতে আগুন লাগে। এ সময় রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্‌বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানকার সব রোগীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে এর আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা হাসিনা বেগম গ্যাস সিলিন্ডারের আগুনে দগ্ধ হয়ে ১২ দিন আগে এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর পিঠসহ শরীরের পেছনের অংশ গ্যাসের আগুনে ঝলসে গেছে। এসিতে আগুন লাগার সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্বামী ইউনুছ আলী।

ইউনুছ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী যে একটা অবস্থা। হঠাৎ আগুন আগুন বলে সবাই চিৎকার করছিল। চিৎকার শুনে ভয়ে আমার স্ত্রীকে পিঠে করে ওয়ার্ড থেকে বের করে আনি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি ভালো হয়ে এলে আবার ওয়ার্ডে যাই।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগীর স্বজন বলেন, হাসপাতালের বৈদ্যুতিক বাতির সুইচসহ এসিগুলো পুরোনো। সুইচ চাপতে গিয়ে এসিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুতের সবকিছু পাল্টানো দরকার। তা না হলে যেকোনো সময় বড় বিপদ হতে পরে।
হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দায়িত্বরত চিকিৎসক আশরাফুল পলাশ প্রথম আলোকে বলেন, ওয়ার্ডে ১৬টি শয্যার মধ্যে ১২ জন রোগী ভর্তি আছেন। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এসিতে আগুনের সূত্রপাত হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে তা ঠিক হয়ে যায়। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ইউনুছ আলী বলেন, আগুন লাগেনি। প্লাগে স্পার্ক করলে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। এ সময় কর্তব্যরত নার্সরা রোগীদের বাইরে বের করেন। এসির প্লাগটি পরিবর্তন করে দেওয়ার পর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে। এতে কোনো সমস্যা হয়নি। কোনো ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তিনি আরও বলেন, একটি একটি পুরোনো হাসপাতাল। রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। বৈদ্যুতিক লাইনসহ সব কাজের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।