শিয়াল–কুকুরের মিতালি

একসঙ্গে খাবার খাচ্ছে শিয়াল–কুকুর। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব পাশের রাস্তায়
ছবি: শহীদুল ইসলাম

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর থেকে রাতে বেরিয়ে আসে শিয়াল। তারা শহরের বেওয়ারিশ কুকুরের সঙ্গে এক রাস্তায় এসে দাঁড়ায়। একসঙ্গে খাবার খায়। স্বভাবে চিরশত্রু হলেও পেটের ক্ষুধায় সেটা ভুলে যায়। প্রতিদিন রাতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব পাশের রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ভাষ্য, সাড়ে তিন বছর ধরে তিনি শিয়াল-কুকুরের এই মিতালি দেখছেন।

শিয়াল-কুকুরের মিতালির প্রথম খবরটি দেন রাজশাহী নগরের মহিষবাথান এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান। তিনি পরপর চার দিন রাতে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় শিয়াল-কুকুরকে একসঙ্গে দেখেন। বিষয়টি যাচাই করতে গত বুধবার রাতে গিয়ে তাদের পাওয়া গেল। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা প্রতিদিন ভাগাড়ে নিতে গৃহস্থালির বর্জ্য ওই এলাকায় জড়ো করেন। তখনই পথের কুকুরগুলো সেখানে যায়। একই সময়ে কারাগারের প্রাচীরের নিচের নালা দিয়ে বেরিয়ে আসে শিয়াল।

উপর্যুপরি বনজঙ্গল ধ্বংসের কারণে শিয়ালকে লুকিয়ে-পালিয়ে বাঁচতে হচ্ছে। প্রায় একই দৃশ্য বেওয়ারিশ কুকুরের ক্ষেত্রেও। খাবারের আশায় রেস্তোরাঁ বা গৃহস্থের দ্বারে গেলে গরম পানি ঢেলেও তাদের তাড়াতে দেখা যায়। তবে ক্ষুধা তো আর আত্মপরিচয়, ভয় বা আইন মানে না। যেমনটা দেখা যাচ্ছে রাজশাহীর এই কুকুর-শিয়ালের মিতালিতে।

বন্যপ্রাণী গবেষক সীমান্ত দীপু প্রথম আলোকে বলেন, স্বভাবগত কারণেই কুকুর প্রভুভক্ত আর শিয়াল বন্য হয়। কুকুর অভ্যস্ত খাবার ছাড়া অন্য কিছু খায় না। আর শিয়াল সবকিছুই খায়।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী রায়হান আলী প্রথম আলোকে বলেন, রাত ১০টার পর থেকে শিয়ালগুলো বের হতে শুরু করে। শীতের সময় একসঙ্গে তিনি ১৫টি পর্যন্ত শিয়াল দেখেছেন।