চাকরি দেওয়ার কথা বলে টেকনাফে এনে এক তরুণকে অপহরণ, দাবি করা হয় মুক্তিপণ
চাকরি দেওয়ার কথা বলে দিনাজপুর থেকে কক্সবাজারের টেকনাফে এনে এক তরুণকে অপহরণ করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে একটি চক্র। পরে ওই তরুণ আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পাহাড় থেকে পালিয়ে এলেও চক্রের দুই সদস্য তাঁর পিছু নেয়। স্থানীয় এক ব্যক্তির সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত তিনি রক্ষা পান।
অপহৃত তরুণের নাম রিফাত ইসলাম (১৮)। তিনি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হাকিমের ছেলে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অনলাইনে মুরগির খামারে ১৮ হাজার টাকা মাসিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রিফাতকে টেকনাফে আনে চক্রটি। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি টেকনাফ পৌঁছালে তাঁকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়।
রিফাত ইসলাম বলেন, ‘চাকরির প্রস্তাব শুনে আমার ভালো লেগেছিল। সংসারে অভাব, চাকরির খুব দরকার ছিল। টেকনাফে এলে একটি খামারও আমাকে দেখানো হয়। পরে অস্ত্রের মুখে আমাকে গভীর পাহাড়ে নিয়ে যায় তারা। একটি ঝুপড়ি ঘরে বেঁধে রাখে। মারধর করে, ভিডিও ধারণ করে। এরপর আমার পরিবারের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’
রিফাত আরও জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে সুযোগ বুঝে তিনি পালিয়ে আসার চেষ্টা করলে চক্রের দুজন সদস্য তাঁকে ধাওয়া করে। এ সময় তিনি দৌড়ে টেকনাফ সদরের মাঠপাড়া এলাকার আব্দুল গফুর সওদাগরের বাড়ির আঙিনায় ঢুকে পড়েন। তখন অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
আব্দুল গফুর সওদাগর প্রথম আলোকে বলেন, ‘তরুণটি প্রাণভয়ে বাড়ির আঙিনায় আশ্রয় নেয়। পরে আমি টেকনাফ থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।’
রিফাতের বাবা আবদুল হাকিম বলেন, ‘চাকরির কথা বলে ছেলেকে টেকনাফে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে। ছেলেকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়েছে। নির্যাতনের ভিডিও আমাদের পাঠানো হয়। মুক্তিপণ না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। আল্লাহর রহমতে ও পুলিশের সহায়তায় শেষ পর্যন্ত ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।’
ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘তরুণটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে অপহরণ করে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন চালানো হয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে ১৭ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫৫ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।