সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগমের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ

স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সোবহানের অনুসারীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। রোববার কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগমের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে। রোববার উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের কিছু নেতা।

অভিযোগ তোলা নেতারা স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সোবহানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আওলাদ হোসেন মাস্টার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যাঁরা আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের সহায়তা করেছেন, তাঁদের কোনো দলীয় পদ দেওয়া যাবে না। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করেছেন তাহমিনা বেগম। তিনি গত কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী এস এম হানিফের বিরোধিতাকারী তৎকালীন পৌর মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার, বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান এবং গত ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজুর রহমানকে নিয়ে গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিমের বাসায় বৈঠক করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আবুল বাশার, কালকিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক, কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার লোকমান হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার, কালকিনি পৌরসভার মেয়র এস এম হানিফ প্রমুখ।

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা আমাদের জেলায় জানানো যেত। জেলা কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারত। জেলা কমিটিকে না জানিয়ে তারা সংবাদ সম্মেলন করতে পারে না। আর যে বিষয়টি সামনে এসেছে, এটা কোনো অভিযোগ হতে পারে না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম তাঁর গ্রামের বাড়িতে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করার, কথা বলার অধিকার সবার আছে। এমন একটি ঘটনা নিয়ে এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানোর বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখব।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা এখানে জড়ো হয়েছি, তাঁরা সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপের অনুসারী। বাহাউদ্দিন নাছিম আমাদের সাবেক সংসদ সদস্য। তাঁর কিছু সমর্থক গত দুটি স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছেন। এখন আবার সংগঠিত হওয়ার জন্য তাঁর বাসায় বৈঠক করেছেন।’

জানতে চাইলে সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাহাউদ্দিন নাছিমের বাসায় আমি তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সেখানে বসে মিটিং করার বিষয়টি সত্য নয়। আর নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছে, তাদের নিয়ে মিটিং করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। একটি মহল রাজনৈতিক অস্থিরতা করার জন্য এমন সংবাদ সম্মেলন করেছে। সামনে নির্বাচন, ওই চক্রটি একজন বিশেষ ব্যক্তির এজেন্ট হয়ে দলীয় অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়।’