ময়মনসিংহে শম্ভুগঞ্জ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ
ময়মনসিংহ নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত চীন মৈত্রী সেতু বা শম্ভুগঞ্জ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। এবার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর সেই সেতুর টোল আদায় বন্ধ করা হয়েছে। ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সেতুটির টোল আদায় বন্ধ করেন।
আজ শনিবার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা কর্নেল মাহমুদ হাসান।
ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু চালু হয়। স্থানীয় মানুষের কাছে শম্ভুগঞ্জ সেতু নামে পরিচিত এই সেতু নির্মাণের ৩৩ বছর পার হয়েছে। ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি এরই মধ্যে নির্মাণ ব্যয়ের টাকা তুলে ফেলেছে। এর পরও তিন বছর পরপর সেতুটি ইজারা দেওয়া হচ্ছিল। স্থানীয় নাগরিকেরা টোল আদায় বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। এ সময় কর্নেল মাহমুদ হাসান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। তাদের দাবি ছিল শম্ভুগঞ্জ সেতুর টোল আদায় যেন বন্ধ করা হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে আমরা কথা বলে সেতুর টোল আদায় বন্ধ রাখার জন্য সাময়িক ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থায়ী ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলছে।’
সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের মানুষ চলাচল করে। সেতুটির টোল হিসেবে প্রতিবার পারাপারের সময় বিভিন্ন ধরনের ট্রাক, বাস, প্রাইভেট কারসহ নানা প্রকারের যানবাহন থেকে আদায় করা হয় ২০ থেকে ২৫০ টাকা। এ ছাড়া সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে ১০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়। বর্তমানে মোটরসাইকেল থেকে কোনো টোল আদায় করা হয় না।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম সাদ্দাম হোসেন জানান, টোল আদায়কে ঘিরে আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, এমন কথা জানিয়ে টোল আদায় বন্ধ করতে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মৌখিক নির্দেশে ইজারা আদায় বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সেতু বা শম্ভুগঞ্জ সেতুটির টোল আদায় শুরু হয় ১৯৯২ সালের দিকে। সর্বশেষ সেতুটি তিন বছরের জন্য প্রায় ৫৬ কোটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল।
সড়কে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক উজ্জল মিয়া বলেন, ‘প্রতিবার পারাপারের সময় ১০ টাকা করে টোল দিতে হয়। গতকাল (শুক্রবার) থেকে ইজারা আদায় বন্ধ রয়েছে। বহুদিন ধরে আমাদের দাবি ছিল, ইজারা যেন বন্ধ হয়। এখন ইজারা তোলা বন্ধ হওয়ায় আমরা খুশি।’