অন্তর্বর্তীকালীন শাসকদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে: রুহুল কবির

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাবের বাড়িতে যান। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন
ছবি: প্রথম আলো

স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে হলে অন্তর্বর্তীকালীন শাসকদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, পরাজিত ঘাতকেরা যাতে কোনো দিক থেকে কোনোভাবেই মাথাচাড়া না দিতে পারে। কারণ, তারা দেশের মানুষের ও গণতন্ত্রের শক্র।

সিলেট নগরের যতরপুর এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাবের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার দুপুরে তিনিসহ বিএনপির নেতা–কর্মীরা এ টি এম তুরাবের বাড়িতে আসেন।

এখনো প্রশাসনে বিভিন্ন জায়গায় পরাজিত শক্তির অনুচররা আছে উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, তাঁদের (পরাজিত শক্তির অনুচর) অনেক কালোটাকা আছে। সেই কালোটাকা তাঁরা পাচার করেছেন। তাঁরা দেশের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কয়েক দিন ধরে গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতা চলছে। এ ঘটনায় এর মধ্যে যাঁরা ধরা পড়ছেন, তাঁদের অনেকেই যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের। তার মানে, চক্রান্ত হচ্ছে। এটা কথার কথা নয়, সত্যিকার ঘটনা। প্রকৃত ঘটনা। এই টাকা দিয়ে নানা প্রকার অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে রুহুল কবির বলেন, ‘এত বড় আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে যে বিজয় আমরা অর্জন করেছি, সেই আত্মত্যাগকে ব্যর্থ করার জন্য নানা চেষ্টা চলছে। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য যে সংস্কারগুলো দ্রুত করার দরকার, সেগুলো করতে হবে।’

আরও পড়ুন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের সমালোচনা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘গোটা পৃথিবীর মানুষ তাঁকে (শেখ হাসিনা) একভাবে দেখেছে, তারা (ভারত) আরেকভাবে দেখেছে। সীমান্তে বাংলাদেশিদের দেখামাত্র গুলি করা হয়। কিছুদিন আগে মৌলভীবাজারে স্বর্ণা দাসকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ–বিএনপির মধ্যে কখনো মারামারিতে ধনঞ্জয়, সুকুমারের মতো কেউ মারা গেলে দিল্লি ও ভারতের বিভিন্ন পলিসি মেকাররা বিভিন্ন রাজনীতি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে হত্যার সময় কারও পরিচয় জানার চেষ্টা করা হয় না।’

আরও পড়ুন

বেলা দুইটার দিকে রুহুল কবির রিজভী গত ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাবের বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিক তুরাবের মা মমতাজ বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তুরাবের পরিবারের পক্ষ থেকে খুনের বিচার যাতে দ্রুত করা হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাবের মায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার বিকেলে নগরের যতরপুর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সাংবাদিক এ টি এম তুরাবের বাড়িতে রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে যান সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।