হাতের কাছের পারকি যেন ‘মিনি কক্সবাজার’

ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর গরমের তীব্রতা বেড়েছে। তাই দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া যেমন ঝক্কির, তেমনি ব্যয়বহুলও। তাই হাতের কাছের বিনোদন স্পটগুলোতে ভিড় বাড়ছে। এই গরমে চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকতেও বাড়ছে পর্যটকের ভিড়।

এখানে এসে অনেকেই কক্সবাজার ভ্রমণ না করতে পারার আক্ষেপ কিছুটা হলেও মেটাতে পারছেন। গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার ছুটির দিনে পারকি সৈকত ছিল গমগমে। চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশের এলাকা থেকে কম সময়ে যাতায়াত করতে পারায় মানুষের ভিড় বাড়ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল চালুর পর জেলার বাইরে থেকেও অনেকে টানেলের পাশাপাশি পারকি সৈকত ঘুরতে আসছেন।

পারকি সৈকত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সৈকতের ঝাউবাগানের পাশে ঝিনুক বেচাকেনা আর ছোট ছোট খাবারের দোকান বসেছে। ভালো খাবার ও নাশতার জন্য সৈকতে গড়ে ওঠা তিনটি রিসোর্টে ভিড় করছেন পর্যটকেরা।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পারকি সৈকত এলাকায় ১৩ দশমিক ৩৩ একর জায়গায় শুরু হয় ৭৯ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এখনো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে পারকি সৈকত পাবে নতুন চেহারা।

গতকাল শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সৈকতের মাঝের চর থেকে দক্ষিণে বাতিঘর পর্যন্ত পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে। এ সময় অনেককে ঝাউবাগানের ভেতরে ও বেড়িবাঁধ লাগোয়া এলাকায় তাঁবু -শামিয়ানা টাঙিয়ে বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। শিশু ও কিশোরেরা সাগরে গোসল করছে। অনেকে বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং মোটরসাইকেল নিয়ে সৈকতে ঘুরতে এসেছেন।

রাঙামাটির কাপ্তাই থেকে স্বামী-সন্তানসহ সপরিবারে পারকি এসেছেন দিলনেওয়াজ আখতার। তিনি বলেন, ‘আমরা পাহাড়ের বাসিন্দা হলেও সমুদ্রের সৌন্দর্য আমাদের টানে। তাই এ গরমেও সবাইকে নিয়ে বেড়াতে এসেছি। পারকি আসায় সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়েছে।’

ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থেকে আসা সরকারি চাকরিজীবী  সামিউল আলম বলেন, ‘আমরা বন্ধুরা একটু ছুটি পেলেই ঘুরতে বের হই। কক্সবাজার যেতে না পারলেও মিনি কক্সবাজার পারকিতে এসেছি। এবারও সবাই মিলে পারকি সৈকতের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু টানেলও দেখলাম। পারকি সৈকত আসলেই সুন্দর।’

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, ‘পারকি সৈকতে পর্যটকের নিরাপত্তা এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে আমরা সব সময় তদারকি করি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।’