পদ্মা সেতু এলাকা থেকে আটক ভারতীয় বন্দীর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর জেলা কারাগারের বন্দী বাবুল সিং (৩৮) নামের এক ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে কারাগারে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে ১৮ জানুয়ারি জেলা কারাগারে সতেন্দ্র কুমার (৪০) নামের আরেক ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল।

বাবুল সিংকে গত বছরের ১৭ মে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজা এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আটক করেন। পরে অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ আইনে জাজিরা থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাবুল সিংকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

জেলা কারাগারের সাব–জেলার রাকিব শেখ প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবুল সিং মারা গেছেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এর আগে তাঁকে ফরিদপুর জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। এরপর তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাঁকে আবার শরীয়তপুর জেলা কারাগারে আনা হয়।

জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরের বিভিন্ন থানায় করা অনুপ্রবেশের অভিযোগে করা মামলায় ২২ ভারতীয় নাগরিক জেলা কারাগারে বন্দী আছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন নারী। তাঁদের সবাইকে পদ্মা সেতুর আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বাবুল সিং গত জানুয়ারিতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে গত মার্চ মাসে তাঁকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। গতকাল রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে শরীয়তপুর জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন তিনি মারা গেছেন। আজ রোববার সদর হাসপাতালের মর্গে বাবুল সিংয়ের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, কারাগার থেকে যখন এক বন্দীকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তখন তাঁর রক্তচাপ (ব্লাড প্রেশার) ছিল না। তা ছাড়া তাঁর হাতে পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

জেল সুপারের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে বন্দী এক ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যুর খবরটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কারা শাখায় চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ওই ভারতীয় নাগরিকের লাশ সদর হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা আসবে, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।