দুই মাস পর খুলে দেওয়া হলো চুরির অভিযোগে বন্ধ খলিলের মাংসের দোকান

গরুর মাংসের দোকান
প্রতীকী ছবি

গরু চুরি করার অভিযোগে বরিশাল সদর উপজেলার তালুকদারহাট এলাকার খলিল হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির মাংস বিক্রির দোকানে দুই মাস আগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন এক জনপ্রতিনিধি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ওই দোকানের তালা খুলে দিয়ে মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

দোকানমালিক খলিল হাওলাদারের ছেলে রায়হান হাওলাদার আজ সোমবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি গতকাল সন্ধ্যায় দোকানের তালা খুলে দেন এবং আমাদের তা বুঝিয়ে দেন। আগামী শুক্রবার থেকে দোকানে আবার মাংস বিক্রি শুরু করব।’

স্থানীয় লোকজন বলেন, সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের তালুকদারহাটে বেশ কয়েক বছর ধরে গরুর মাংস বিক্রি করেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদি ইউনিয়নের হলতা গ্রামের খলিল হাওলাদার। কিন্তু চাঁদপুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম মাজাহারুল ইসলাম গত ৫ রমজানের দিন গরু চুরির অভিযোগ তুলে খলিলের মালিকানাধীন ‘খলিল মিট হাউস’ নামে দোকানটি বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে খলিল এলাকায় দোকান করতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দেন।

খলিল অভিযোগ করেন, ‘ইউপি সদস্য মাজহারুল আমাকে চুরির অপবাদ দিয়ে দোকানে তালা দিয়ে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। টাকা দিলে দোকানদারি করতে পারব, অন্যথায় এই বাজারে দোকানদারি করতে পারব না বলে আমাকে শাসিয়েছিলেন। কিন্তু এত টাকা দেওয়ার সক্ষমতা আমার নেই। আমার পরিবারে আটজন সদস্য। এত বড় সংসার আমার একার উপার্জনে চলে। দোকান বন্ধ করে দেওয়ার পর অসহায় হয়ে পড়ি।’

ইউপি সদস্য মাজাহারুল ইসলামের বলেন, খলিল একজন গরুচোর। তিনি কয়েক দিন আগে চুরি করা ৮টি গরুসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলহাজতে ছিলেন। দেড় বছর আগে তাঁর (মাজহারুল) একটি গরু খলিল চুরি করেন। এ নিয়ে থানায় ওই সময় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া এলাকার আরও চারটি গরু তিনি চুরি করেছেন বলে নানা মাধ্যমে অভিযোগ রয়েছে।

মাজাহারুল আরও বলেন, ‘আমি খলিলের কাছে কোনো টাকা দাবি করিনি। গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দোকানটি খুলে দিয়েছে। কী আর করার? এলাকার মানুষ যদি মানতে পারে, তাহলে আমার তো আপত্তি করার কিছু নেই।’

খলিলের ছেলে আবদুল করিম বলেন, ‘প্রথম রমজানের দিন আমার বাবাকে গরু চুরির অভিযোগে বাকেরগঞ্জ থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। স্থানীয় শত্রুতাবশত এটা হয়েছিল। পরে ২৫ দিন ওই মামলায় কারাবাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। আমার বাবা নিরপরাধ। অন্যায়ভাবে দোকানে তালা দেওয়া হয়েছিল। এখন দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা আবার ব্যবসা শুরু করব।’

চাঁদপুরা ইউপির চেয়ারম্যান মো. জাহিদ হোসেন বলেন, গরু চুরির ঘটনায় খলিল বাকেরগঞ্জে পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেলহাজতে ছিলেন। পুলিশ তদন্ত করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।