বাবুগঞ্জের ঘটনায় এক দিনেই বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে: এবি পার্টির নেতা ফুয়াদ
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বিএনপির উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনাদের দলের একাংশের আচরণের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার ভোট কমছে। গতকালের বাবুগঞ্জের ঘটনায় এক দিনেই ১০ লাখ ভোট কমে গেছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।’
গতকাল রোববার বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের পর ‘আসাদুজ্জামান ও তাঁর দলীয় নেতা-কর্মীদের হেনস্তা এবং হামলার প্রতিবাদে’ আজ সোমবার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
বিএনপিকে ‘বড় দল’ উল্লেখ করে আসাদুজ্জমান বলেন, ‘তাদের দায়িত্বও ততটাই বড়। তারেক রহমান ৩১ দফায় সংস্কারের যে কথা বলেছেন, তার আগে আমরা দেখতে চাই, আপনি আপনার দলকে ঢেলে সাজাচ্ছেন কি না। দলের মধ্যে অপরাধীদের রেখে শহীদ জিয়ার বাংলাদেশ বা বেগম খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির নেতা অভিযোগ করেন, ঘটনার সময় বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকেও নীরব ভূমিকা পালন করেছেন। দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও বরখাস্তের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘দুই মাস ধরে আমার নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে নিয়মিতভাবে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে। থানায় গেলেও মামলা নেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি না।’
প্রশাসনের একটি অংশ দলনিরপেক্ষতার নীতিকে উপেক্ষা করে ক্ষমতাসীন বা সম্ভাব্য ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে অবস্থান বদলের সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়েছে—এমন অভিযোগ তোলেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘প্রশাসন ধরেই নিয়েছে—আওয়ামী লীগ থাকলে আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি এলে আমরা বিএনপি। একটি রাষ্ট্র এভাবে চলতে পারে না। গত বছরের লড়াই ছিল রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র বানানোর লড়াই।’
প্রশাসনের উদ্দেশে কঠোর ভাষায় আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অ্যাকশনে যান। তা না হলে আপনাদের অবহেলার কারণেই এই ব্যর্থতা নির্বাচনটাকে ব্যর্থ করে দেবে। এর সম্পূর্ণ দায় আপনাদেরই নিতে হবে।’
গতকাল বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মীরগঞ্জ সেতুর নির্মাণকাজ পাওয়া ঠিকাদারের কাছে ‘স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে’—গণমাধ্যমে এমন বক্তব্য দিয়ে তোপের মুখে পড়েন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ সময় এবি পার্টি ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়। তাঁর এ বক্তব্যে সেখানে উপস্থিত স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তাঁরা আসাদুজ্জামানের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান এবং কয়েকজনকে তেড়ে আসতে দেখা যায়। পরে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধ লোকজন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আসাদুজ্জামান তাঁর নেতা-কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। বিএনপি নেতা-কর্মীরাও ‘ভুয়া ভুয়া’সহ বিভিন্ন উত্তেজনাকর স্লোগান দিতে দিতে তাঁকে অনুসরণ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।