বাল্যবিবাহের আট মাস পর আনজুমের লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার

স্বামী এমরান হোসেনের সঙ্গে আনজুম নূরে আরশি ওরফে ঐশী
ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর বদলগাছীতে যৌতুক না পেয়ে এক কিশোরী গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তার স্বামীকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গতকাল রোববার মামলাটি করেন। পুলিশ ওই দিনই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত ওই কিশোরীর নাম আনজুম নূরে আরশি ওরফে ঐশী। সে উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের কার্ত্তিহার গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। একই উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের হলুদবিহার গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে এমরান হোসেনের সঙ্গে আট মাস আগে তার বিয়ে হয়। সে এবার কার্ত্তিহার দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। মামলার এজাহারে তার বয়স ১৭ বছর বলা রয়েছে।

মামলার এজাহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে এমরানের সঙ্গে আনজুমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমরানের বয়স ২২ বছর, পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। গত বছরের ১৬ আগস্ট এমরান ও আনজুমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর এমরান দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকার জন্য আনজুমকে মারধর করতেন এমরান।

বিয়ের পর এমরান দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকার জন্য আনজুমকে মারধর করতেন এমরান।

আনজুম এবার ঈদুল ফিতরে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়ি কার্ত্তিহার গ্রামে বেড়াতে আসেন। ২০ এপ্রিল এমরান তাঁর শ্বশুরবাড়িতে আসেন। ওই দিন রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী ঘুমাতে যান। এ সময় আনজুমকে তার স্বামী মারধর করেন। ওই দিন গভীর রাতে ঘর থেকে বের হয়ে এমরান উদ্ভট আচরণ করতে থাকেন। তখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘরে গিয়ে গলায় ওড়না প্যাঁচানো আনজুমের লাশ দেখতে পান। পুলিশ পরদিন রোববার লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

মেয়েটির বাবা শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঐশী এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের কারণে ঐশীকে বাল্যবিবাহ দিতে বাধ্য হয়েছি। বিয়ের পর থেকে জামাই দুই লাখ টাকা যৌতুক চাচ্ছিল। যৌতুকের টাকার জন্য জামাই এমরান আমার মেয়ে ঐশীকে মারধর করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, যৌতুকের জন্য মারপিট করে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। আসামি এমরান হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।