মাদারীপুরে চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা
মাদারীপুরে চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার।
আজ বুধবার বিকেলে জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক ফয়সাল আল মামুন অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন দৈনিক সমকাল ও বাংলাভিশন টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ফরিদ উদ্দিন মুপ্তি, এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মাসুদ হোসেন খান এবং একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক আজিজ মুনশি।
ওই তিন সাংবাদিকের দাবি, উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নবিদ্ধ করতে বাবুল আক্তার তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। তাঁরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৩ মার্চ দৈনিক সমকালে ‘ধর্ষণের অভিযোগ ৪ লাখ টাকায় রফা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। স্থানীয় ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত কয়েকটি অনলাইনেও প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার সালিস মীমাংসা করে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান বাবুল আক্তার। তিনি বলেন, ঘটমাঝি ইউনিয়নের চিড়াইপাড়া গ্রামের একটি প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে সালিসের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ৯ মার্চ চাঁদা দাবি করে না পেয়ে মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করেন ওই তিন সাংবাদিক। এতে তাঁর মানহানি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
মামলার বাদীর আইনজীবী সুজন ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু বারের (আইনজীবী সমিতি) সাধারণ সম্পাদক নয়, মাদারীপুর আইনজীবী সমিতিকে জড়িয়ে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। বারের সম্মানহানির পরিপ্রেক্ষিতে বিচার চেয়ে মামলা করা হয়েছে। আশা করছি, আমরা ন্যায়বিচার পাব।’
এদিকে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাদারীপুর প্রেসক্লাবসহ জেলার তিনটি সাংবাদিক সংগঠন।
মাদারীপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াকুব খান বলেন, সাংবাদিকেরা তাঁদের সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেই সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এখানে ওই আইনজীবীর (বাবুল) স্বার্থে আঘাত লাগায় তাঁরা অপরাধ ঢাকতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। এ মামলার কোনো ভিত্তি নেই। মামলাটি হয়রানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।