কক্সবাজার-৪ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

নুরুল বশর, সোহেল আহমদ, মোহাম্মদ ইসহাকছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৯ জন। এর মধ্যে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা দেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল বশর, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ ও একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির সন্তান দাবিদার মোহাম্মদ ইসহাক।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১ শতাংশ ভোটারের যে তালিকা প্রার্থীরা জমা দিয়েছেন, তাতে গরমিল পাওয়া গেছে। এ কারণে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়া অপর ছয় প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার; জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার; ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদ আলম; তৃণমূল বিএনপির মুজিবুল হক মুজিব; ইসলামী ঐক্য জোটের মোহাম্মদ ওসমান গনি চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. ইসমাইল।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আপিলের সুযোগ পাবেন। তবে তাঁদের মধ্যে আপিলে সোহেল আহমদ ও নুরুল বশরের মনোনয়নপত্র বাতিল হলে লাভবান হবেন শাহীন আক্তার। দুই প্রার্থী মাঠে থাকলে শাহীন আক্তারকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতো বলে মনে করেন ভোটাররা।

সোহেল আহমদের বাবা নুর আহমদ ছিলেন জাতীয় পরিষদের (এমএনএ) সদস্য। প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী হিসেবে টেকনাফে তাঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় টেকনাফের প্রথম পাকিস্তানি হানাদাররা আগুন দিয়েছিল নুর আহমদের ঘরে।

অন্যদিকে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশরের পরিবারও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। দলে তাঁর অনুসারীও রয়েছে। নুরুল বশরের ছোট ভাই নুরুল আলম বর্তমানে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি।

মনোনয়নপত্র বাতিল প্রসঙ্গে সোহেল আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া ১ শতাংশ ভোটারের মধ্যে পাঁচজনকে ‘ম্যানেজ’ করে তাঁদের দিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। এ কারণে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল করবেন।

একই কথা বলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল বশরও। তিনি বলেন, অবস্থা নড়বড়ে দেখে একটি প্রভাবশালী মহল টাকার বিনিময়ে ভোটারদের ‘ম্যানেজ’ করে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করিয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি তাঁর বাবা। পিতৃত্বের স্বীকৃতি আদায় করতে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। চক্রান্ত করে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তারপরও তিনি মাঠ ছাড়বেন না।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ এবং ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।