নোয়াখালীতে আ.লীগ নেতাকে মারধর করে পুকুরে ফেলার অভিযোগ

হামলা
প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় মো. আবদুল সাত্তার (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে দলের কর্মীরা মারধর করে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার ছাতারপাইয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে আবদুল সাত্তারকে গতকাল রাতে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আবদুল সাত্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আবদুল সাত্তার সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন।

দলীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বেলা তিনটায় ছাতারপাইয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ওরফে লায়ন মানিক।

আবদুল সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, সম্মেলনের প্রথম পর্ব শেষ হতে মাগরিবের নামাজের সময় হয়ে যায়। প্রধান অতিথিসহ অনেকেই তখন নামাজ পড়তে যান। দ্বিতীয় অধিবেশন (কাউন্সিল) শুরু হওয়ার অপেক্ষায় তিনি ওই সময় সম্মেলনস্থলের আশপাশেই অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ করে ওই সময় সাধারণ সম্পাদক পদের আরেক প্রার্থী মো. সুমনের পক্ষের দলীয় কর্মীরা তাঁর ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা তাঁকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে গুরুতর আহত করে পাশের পুকুরে ফেলে দেন। পরে দলের অন্য কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিদায়ী কমিটির সভাপতি নুরুল হক মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সম্মেলনে সভাপতি পদে তিনিসহ পাঁচজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল সাত্তারসহ ৯ প্রার্থী আছেন। কিন্তু সম্মেলন ছাড়াই তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী ব্যক্তিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করার জন্য দলের মধ্যে একটি প্রভাবশালী চক্র ষড়যন্ত্র করছে। এর মধ্যেই ১৬ জানুয়ারি দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের দাবি জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ কারণে কাউন্সিলের পরাজয়ের ভয়ে ভীত পক্ষটি সাত্তারের ওপর হামলা করেছে বলে তিনি দাবি করেন।

দলীয় সূত্র জানায়, সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আবদুল সাত্তারের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ডমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কবির প্রমুখ। তবে শেষ পর্যন্ত সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন হয়নি। তাই নতুন কমিটিও গঠন করা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. সুমনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। তাই এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল সাত্তারকে মারধরের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সেখানে অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আবদুল সাত্তার বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।