টাঙ্গাইলের সেই সরকারি পুকুর আবার ভরাটের চেষ্টা

২০১৮ সালেও সরকারি ওই পুকুর ভরাট করার চেষ্টা করা হয়। তখন প্রশাসন পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে খাস খতিয়ানভুক্ত পুকুরে মাটি ফেলা হচ্ছে। গত শুক্রবার মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব পাশেছবি : প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় রাতের আঁধারে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত একটি পুকুর ভরাটের চেষ্টা করেন এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম বুলবুল এক মাটি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে ওই পুকুর ভরাটে কখনো মাটি ফেলবেন না, এমন মুচলেকাও নেওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসী ও উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী মৌজার ৩৮২ দাগে ৩৭০ শতক এবং ৩৮৩ দাগে ১৫০ শতক সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত নদী শ্রেণির জমি আছে। অবৈধভাবে ওই জমি দখলের জন্য স্থানীয় কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুকুরটি ভরাটের জন্য ট্রাকযোগে মাটি ফেলা হচ্ছিল। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে যান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মাটি ব্যবসায়ী এবাদত মৃধা। তাঁকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁর কাছ থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং মুচলেকা নেওয়া হয়।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের মার্চে একই পুকুর ভরাটের চেষ্টা করা হয়। তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এর এক মাস পর ওই ব্যক্তিরা আবার মাটি দিয়ে পুকুর ভরাটের চেষ্টা করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মাসখানেক আগে পুকুর ভরাটের গুঞ্জন শুনে কেউ যাতে সরকারি জমিতে অনুপ্রবেশ না করতে পারেন সে জন্য ভূমি কার্যালয় থেকে পুকুরের পাশে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছিল, কিন্তু এক সপ্তাহ আগে সেটি উধাও হয়ে যায়।

মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, মির্জাপুর বাজারসংলগ্ন পুকুরটির দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ঘনবসতি এলাকা। সরকারি ওই পুকুর ভরাট হয়ে গেলে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়বেন। অগ্নিনির্বাপণ কাজের জন্য পুকুরের পানি খুবই জরুরি। যেকোনো ধরনের অগ্নিকাণ্ডে পুকুরটি ফায়ার সার্ভিসের জন্য সহায়ক। এ ছাড়া যেখানে পুকুর নেই সেখানে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে স্থানীয় ব্যক্তিদের জলাশয় তৈরি করতে বলা হয়। আর সেখানে সরকারি পুকুর ভরাটের চেষ্টা কারও কাম্য নয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকারি ওই পুকুর ভরাটের চেষ্টায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ছাড়া জরিমানা দেওয়া ব্যক্তি এবাদত মৃধাকে পুকুর থেকে মাটি তুলে নিতে বলা হয়েছে।