চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি রিমান্ডে

রাজশাহীগামী চলন্তবাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ আলমগীর হোসেন শেখ ও রাজিব হোসেন শেখ নামে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসাম্মৎ রুমি খাতুন শুনানি শেষে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই আসামির মধ্যে মো. আলমগীর হোসেন শেখকে ছয় দিনের জন্য এবং তাঁর ভাই রাজিব হোসেন শেখকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।

শুনানির পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে সন্ধ্যায় নিজেদের হেফাজতে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা ডিবির উপপরিদর্শক মো. আহসানুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার দুই ভাই ঢাকার আশুলিয়ার ধানশোনা এলাকার পলাশবাড়ী এলাকায় থাকতেন। তাঁরা মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আমতলী গ্রামের খোরশেদ আলম শেখের ছেলে। বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় এ নিয়ে মোট পাঁচজন গ্রেপ্তার হলেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত নামে একজন গত শনিবার থেকে পাঁচ দিনের জন্য টাঙ্গাইল ডিবির রিমান্ডে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আলমগীর হোসেনকে গতকাল সোমবার নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সাধুরপারা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আন্তজেলা ডাকাত দলের ‘মাস্টার মাইন্ড’। এ সময় তাঁর কাছ থেকে বাসে ডাকাতিকালে লুণ্ঠিত ৪ হাজার ২১০ টাকা, দুটি রুপার আংটি উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার পর আলমগীর পুলিশকে জানায়, ডাকাতিকালে লুণ্ঠিত মুঠোফোন, গয়না ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ছুরি তাঁর ছোট ভাই রাজিবের কাছে রয়েছে। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে রাজিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ডাকাতিকালে লুণ্ঠিত ১০টি মুঠোফোন, নারী যাত্রীদের ইমিটেশনের গয়না, তিনটি ব্যাগ, তিনজন যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। আলমগীরের বিরুদ্ধে ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

১৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ইউনিক রোড রয়েলসের আমরি ট্রাভেলস নামক বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে যাত্রীবেশী ৮ থেকে ৯ জন ডাকাত অস্ত্রের মুখে বাসটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকাপয়সা, মালামাল লুণ্ঠন করে। এ সময় তাঁরা দুই নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানিও করেন। ঘটনার তিন দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামে এক যাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন।

আরও পড়ুন

মামলার পর টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও মির্জাপুর থানা–পুলিশের সমন্বয়ে একটি বিশেষ দল গঠন করে দেন। ওই দিনই দলটির সদস্যরা ডাকাতদের সন্ধানে মাঠে নামেন। এর মধ্যে গত শুক্রবার গোয়েন্দা পুলিশ সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে শহিদুল ইসলাম, মো. সবুজ ও শরীফুজ্জামান শরীফ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে মো. সবুজ ও শরীফুজ্জামান শরীফ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শনিবার আদালতে জবানবন্দি দেন। তাঁরা এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন। আর শহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।