অপহরণ মামলার ব্যাখ্যায় যা বললেন বিদিশা

সংবাদ সম্মেলনে বিদিশা সিদ্দিক। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা প্রেসক্লাব মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

অপহরণ ও স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারী তাঁর কর্মচারী আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন। আতিকুর গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ি ইউনিয়নের কিশামত মালিবাড়ি ধর্মপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

বিদিশা বলেন, ‘আতিকুর রহমান আমার পিএস-এপিএস এ রকম কিছুই ছিল না। সে আমার গাড়িচালকের ভাগনের পরিচয়ে আমার ঢাকার রেস্টুরেন্টে কাজ নেয়। সেখানে থালাবাটি পরিষ্কার করত। মূলত সে আমার রেস্টুরেন্টের কর্মচারী ছিল। একপর্যায়ে তাকে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারের দায়িত্ব দেই। পরে তাকে ড্রাইভিং শিখিয়ে গাড়ি চালানোরও দায়িত্ব দেই। সে দীর্ঘদিন আমার গাড়ি চালিয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘একসময় আতিকুর আমাকে প্রস্তাব দেয়, গাইবান্ধা এলাকায় একটি ইটভাটা নির্মাণ করার জন্য। তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে আমি তাকে ৬ কোটি টাকা দেই। এ টাকার মধ্যে আমার এফডিআর, ঋণ ও অন্যের কাছে ধার নেওয়া টাকা রয়েছে। এ টাকায় আমার মালিকানায় ইটভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়। এটাই ছিল আমার জীবনের আরেকটি বড় ভুল। ওকে আমি ওমরা হজ করতে নিয়ে যাই। সে কাবা শরিফ ছুঁয়ে আমাকে কথা দেয়, ম্যাডাম, আপনার সাথে জীবনে বেইমানি করব না। আপনার টাকা তছরুপ করব না। আতিকুরের সাথে আমার লিখিত চুক্তি ছিল প্রতি মাসে আমাকে লভ্যাংশের টাকা দেবে। এরপর ইটভাটা চালু হলে আতিকুর আমাকে প্রথম এক বছর লভ্যাংশের কিছু টাকা দিয়েছে। এ পর্যন্ত সে আমাকে লভ্যাংশের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা দেয়। হিসাব করে দেখা যায়, আমি তার কাছে আরও আসল ও লভ্যাংশ মিলে ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা পাই। এরপর আস্তে আস্তে আমার সাথে দূরত্ব তৈরি করে। মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তার পরিবারও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি। তখন আমি বাধ্য হয়ে গাইবান্ধায় আসি, ভাটায় যাই। সেখানে তাকে ডেকে নিই বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য। তখন আতিকুর আমাকে বলে, ঢাকায় চুক্তিপত্র হয়েছে, ভাটায় আলাপ না করে ঢাকায় আপনার বাসায় যাই। তাই সে আমার সাথে ঢাকায় যায়। পরে টাকা লেনদেনের বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সে তার ভাই–বাবাকে ঢাকায় ডেকে নেয়।’

বিদিশার বক্তব্য প্রসঙ্গে আতিকুর রহমান বলেন, ‘ম্যাডামের অভিযোগগুলো সঠিক নয়।’

গত ২৮ মার্চ অপহরণ, ১০ দিন ঢাকার বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন ও অস্ত্রের মুখে স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগে বিদিশা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা আমলি আদালতে (সদর) মামলা করেন আতিকুর রহমান। মামলায় বিদিশাসহ চারজনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য গাইবান্ধা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।