পুলিশের ওপর হামলা মামলায় নেত্রকোনায় বিএনপির ৭৩ নেতা-কর্মী কারাগারে

কারাগার
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার মদনে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির ৭৩ নেতা-কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে মদন আমলি আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুঞ্জুরুল হক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে কাল মঙ্গলবার পরীক্ষা থাকায় নবাব মিয়া (২১) নামের এক শিক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শফিউল হক তালুকদার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জামিন নামঞ্জুর হওয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে আছেন মদন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও চানগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম আকন্দ, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. কামরুজ্জামান চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুল হেলিম, বিএনপি নেতা সাইফ আহমেদ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রুবেল মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, সদস্যসচিব এস এইচ পিকুল প্রমুখ। এ ছাড়া জামিন পেয়েছেন মদনের চানগাঁও গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে নবাব মিয়া। তিনি আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও ভোলায় গুলিতে বিএনপির দুই নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট দুপুরে মদনের চানগাঁও শাহপুর ঈদগাহ মাঠে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশে জড়ো হন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও একই স্থানে জড়ো হতে থাকেন। এতে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খোরশেদ আলম, কনস্টেবল আজিজুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অন্তত ১৮ জন আহত হন।

এ ঘটনায় ওই দিন রাতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ দত্ত বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগ এনে মামলা করেন। মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. নুরুল আলমকে প্রধান করে ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৩০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। আজ সোমবার মামলার ৭৪ জন আসামি আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বিচারক ৭৩ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শফিউল হক বলেন, মামলার ৭৪ জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজ দুপুরে তাঁরা নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে যান। পরে পরীক্ষার্থী নবাব মিয়া ছাড়া বিচারক অন্যদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে  বলেন, ‘গত ৩১ আগস্ট পূর্বনির্ধারিত স্থানে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। পরে উল্টো পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এ ঘটনায় আমরা নিন্দা জানাই। আশা করি আদালত বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’