‘পাঠাগারে বইগুলো পেয়ে আমরা প্রাণ পেয়েছি’

প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে ঠাকুরগাঁওয়ের চারটি পাঠাগারে বই উপহার দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার শহরের বড়মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পল্লিতে একটি পাঠাগার গড়ে তুলেছেন দীপালী খালকো। সেখানে এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পরিবারের শিশুরা বই পড়তে আসে। কিন্তু আর্থিক সংকটে নতুন বই কিনতে পারছিলেন না দীপালী। প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের পক্ষ থেকে বই পেয়ে দীপালী খালকো বলেন, ‘পাঠাগারে বইগুলো পেয়ে আমরা প্রাণ পেয়েছি। এই বইয়ের পেয়ে আমাদের পাঠাগারটি আরও সমৃদ্ধ হলো।’

প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে ঠাকুরগাঁওয়ের চারটি পাঠাগারে গল্প, উপন্যাস, কবিতা ও ছড়ার প্রায় ২১০০ বই উপহার দেওয়া হয়েছে। আরও কিছু ধারাপাত ও অক্ষর শেখার বইও দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার শহরের বড়মাঠে এ আয়োজন করা হয়। বই পাওয়া পাঠাগারগুলো হলো ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের গোবিন্দ্রনগরের আদিবাসী শিশু একাডেমি পাঠাগার, সদর উপজেলার পুরোনো ঠাকুরগাঁও উচ্চবিদ্যালয় পাঠাগার, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার শহীদ কমরেড কম্পরাম সিংহ স্মৃতি পাঠাগার, হরিপুর উপজেলার অক্সিজেন ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাঠাগারের প্রতিনিধিদের হাতে বইগুলো তুলে দেন সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক নাসরিন জাহান, আরকে স্টেট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ফেরদৌসী বেগম, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ফরহাদুল ইসলাম ও প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। অনুষ্ঠানে আদিবাসী শিশু একাডেমি পাঠাগারের পক্ষ থেকে দীপালী খালকো, পুরোনো ঠাকুরগাঁও উচ্চবিদ্যালয় পাঠাগারের পক্ষে প্রধান শিক্ষক সমেশ চন্দ্র বর্মণ, শহীদ কমরেড কম্পরাম সিংহ স্মৃতি পাঠাগারের পক্ষে মো. রাসেল ও অক্সিজেন ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের পক্ষ থেকে মোজাহেদুর ইসলাম বইগুলো গ্রহণ করেন।

পুরোনো ঠাকুরগাঁও উচ্চবিদ্যালয় পাঠাগারের প্রতিনিধি সমেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে একটি বেসরকারি সংস্থা তাঁদের স্কুলে একটি পাঠাগার করে দেয়। কিন্তু পাঠাগারটি বই পুরোনো হয়ে যাওয়ায় পাঠকেরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এখন নতুন বই পাওয়ায় পাঠকের আগ্রহ আবার ফিরে আসবেন।

আরও পড়ুন

অনুষ্ঠানের অতিথি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখন মুঠোফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছি। এই আসক্তি দূর করতে হলে আমাদের বই পড়ার অভ্যাস করতে করতে হবে। ভালো ভালো বই পড়তে হবে। প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশ দেশের পাঠাগারে বই উপহার যে কার্যক্রম নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। এতে সমাজ উপকৃত হবে। পাঠাগারে বই উপহার দেওয়ার মতো একটি কাজে যুক্ত হতে পারা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়।’

আয়োজকেরা বলেন, বিকাশ সারা বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠাগার ও বৃদ্ধাশ্রমে মোট ৭৫ হাজার বই বিতরণ করছে। আর বিকাশের নেওয়া এই বই বন্ধনের উদ্যোগের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে আছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে প্রথম আলো ট্রাস্টে বই কেনার জন্য অনুদানও দিতে পারেন গ্রাহক। অসংখ্য মানুষের ছোট ছোট অনুদানকে একত্রিত করে এই উদ্যোগের আওতায় ২০২২ সাল পর্যন্ত ৭২ হাজার ৫০০টি বই বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের বই বিতরণ চলমান রয়েছে।