পাঁচ দাবিতে গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি প্রদান

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন। মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনেছবি: প্রথম আলো

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব–সংকট নিরসনসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। দাবি আদায়ে সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে তাঁরা দাবি–সংবলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্যের কাছে দেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ আলী তোহা। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের প্রতিটি জায়গায়কে সমান নজরে দেখার চেষ্টা করছেন। এ সময়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয় এত অবহেলা বা বৈষম্যের শিকার হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।

মোহাম্মদ আলী তোহা বলেন, ‘গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে হল–সংকট, ক্লাসরুম–সংকট, মেইন গেট নেই, শিক্ষক–সংকট এগুলো দীর্ঘদিনের দাবি শিক্ষার্থীদের। এই মৌলিক অধিকারের জন্য বারবার কেন শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম ছেড়ে রাজপথে আসতে হবে? এসব সমস্যা, তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাওয়া যায় না কেন? আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো আমলে নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে। দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হলো। ৭ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে শিক্ষার্থীরা।’

শিক্ষার্থীদের দেওয়া পাঁচ দফা দাবি হলো ১. বিশ্ববিদ্যালয়ের অসমাপ্ত কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। ন্যূনতম ১০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, একাডেমিক ভবন-২ ও অনুষদ ভবন সম্প্রসারণ, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন–সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত হল নির্মাণে দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। হল নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দিতে হবে। সব কাজের টেন্ডার সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে হবে। ২. প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২০ জন শিক্ষক, পর্যাপ্ত ল্যাব এবং অফিস সহকারী নিয়োগ দিতে হবে। শিক্ষকের জন্য উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গমনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের সব তথ্য, রেজাল্ট, লেনদেন অনলাইনভিত্তিক করতে হবে। ডিজিটাল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ৪. বিগত সময়ের দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনতে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। ৫. দ্রুত সময়ে সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। ছাত্র সংসদ ঘোষণা করতে হবে। রেজিস্ট্রার গ্র্যাজুয়েট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রিজেন্ট বোর্ডে চারজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী দুর্জয় শুভ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নিঘাত রৌদ্র, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নূপুর রায়, নওরীন নীরা প্রমুখ বক্তব্য দেন।