দশমিনার আদমপুরা সেতুর নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের এক বছরেও শেষ হয়নি

মোল্লাবাজারে ২০২২ সালে সেতুর কাজ শুরু হয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু আজও হয়নি।

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় দুই ইউনিয়নের সংযোগ সড়কের আদমপুরা খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতুছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় আদমপুরা খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ নির্ধারিত সময়ের এক বছর পরও শেষ হয়নি। এতে দশমিনার দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ ২০ কিলোমিটার ঘুরে জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, দশমিনার বহরমপুর ও বেতাগিসানকিপুর ইউনিয়নের সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার। এই সড়কের মোল্লাবাজার এলাকায় আদমপুরা খালের ওপরের পুরোনো লোহার সেতুটি কয়েক বছর আগে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর সেখানে গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়ে) আওতায় ২০২২ সালের ১৫ মার্চ এই সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ১০৫ ফুট দীর্ঘ ও ১৮ ফুট প্রস্থের এই সেতু নির্মাণে চুক্তিমূল্য ছিল ৪ কোটি ১৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল‍।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, খালের দুই পাশে সেতুর দুটি পাকা পিলার নির্মাণ করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে নির্মিত কাঠের সাঁকো দিয়ে মানুষ চলাচল করছেন। তবে সাঁকোটির কয়েকটি পাটাতন ভেঙে গেছে। 

সেতু এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী এনামুল হক বলেন, আগে তাঁদের এখানে লোহার সেতু ছিল। কিন্তু জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় তাঁরা  সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় ধরে সেতুর কোনো কাজ হয় না।

বহরমপুর ইউপি সদস্য গিয়াসউদ্দিন মৃধা বলেন, সেতুর পশ্চিম পাড়ে দক্ষিণ আদমপুর, পশ্চিম আদমপুর ও পূর্ব আদমপুর গ্রাম এবং পূর্ব পাড়ে উত্তর আদমপুর গ্রাম। এই চার গ্রামের কৃষিকাজে আদমপুর খালের পানি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সেতু নির্মাণের সময় খালে বাঁধ দেওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট হচ্ছে তাঁদের।  

বেতাগিসানকিপুর ইউপির চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়ায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুই ইউনিয়নের পণ্যবাহী যানবাহনগুলো প্রায় দ্বিগুণ পথ ঘুরে চলাচল করছে। যদি এই সেতুর কাজ ঠিক সময়ে শেষ হতো, মানুষের অনেক সুবিধা হতো।  

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ইকবাল মাহামুদ বলেন, ইতিমধ্যে সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেতুর ওপরের অংশের কাজ করা হবে। কিন্তু শ্রমিকের সংকটের কারণে যথাসময়ে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করা যায়নি। দ্রুত সেতুর বাকি কাজ শেষ করা হবে। এ জন্য ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়েছে।

এলজিইডির দশমিনা উপজেলা প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের সময় বাড়িয়ে নিয়েছে। তবে দ্রুত ঠিকাদার কাজ শেষ করবেন বলে তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।