পটিয়ায় ইগল প্রতীকের প্রচারণায় হামলা, হুইপের গাড়িসহ ৬টি গাড়ি ভাঙচুর

চট্টগ্রামের পটিয়ার বুধপুরায় ইগল প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। আজ বিকেল সাড়ে চারটায়সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বুধপুরা এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের সময় আজ বুধবার বিকেলে সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হুইপের একটি গাড়িসহ মোট ছয়টি গাড়ির চাকা কেটে দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর পক্ষের লোকজন এই ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক।

হামলার ঘটনায় অন্তত ৮ জন আহত হন বলে সামশুল হক চৌধুরী দাবি করেন। তাঁরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সামশুল হক চৌধুরী এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে এখানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জানা গেছে, আজ সকাল থেকে সামশুল হক চৌধুরী পটিয়ার বুধপুরা, পিঙ্গলা, কাশিয়াইশ, নয়াবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ৮ থেকে ১০ টি গাড়ি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিল। গণসংযোগকালে তিনি ঈগল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। তাঁর সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য দেবব্রত দাশ, আবু ছালেহ চৌধুরীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

ইগল প্রতীকের প্রার্থী ও সমর্থকদের গাড়ির চাকাও কেটে দেওয়া হয়। আজ বিকেলে
ছবি: সংগৃহীত।

বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণা শেষে বিকেল চারটার দিকে সামশুল হক নেতা-কর্মীদের নিয়ে কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা শিয়ারপাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল হুদার বাড়িতে ভাত খেতে ঢোকেন। এ সময় বাইরে রাখা গাড়িগুলো ভাঙচুর করা হয়।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হুইপের গাড়ি নুরুল হুদার বাড়ির ভেতরের আঙিনায় রাখা হয়। বাকি গাড়িগুলো বাইরে ছিল। হুইপের সঙ্গে আমরাও ওই বাড়ির ভেতরে ভাত খাচ্ছিলাম। এ সময় মুখ বেঁধে আসা কয়েকজন বাইরে থাকা গাড়িগুলোর চাকা কেটে ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ ও আমাদের পক্ষের লোকজন এলে তাঁরা চলে যান।’

হুইপের সঙ্গে থাকা অন্তত চারটি গাড়ির চাকা কেটে দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রচারের দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। এরপর বুধপুরা বাজারে ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্পও ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ ও ঈগল প্রতীকের লোকজন উপস্থিত হলে প্রতিপক্ষের লোকজন চলে যান।

হুইপ সামশুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর নাম ধরে স্লোগান দিয়ে কার্যালয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমার ব্যবহার করা দুটি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়ির চাকা কেটে দেওয়া হয়। আরও অন্তত ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে এই হামলা করা হয়। এতে আহত হয়েছেন ৮ জন। হামলায় প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সঙ্গে থাকা কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও সন্ত্রাসীরা অংশ নেন। এই ঘটনায় আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’  

জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুধপুরা এলাকায় সংসদ সদস্যের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা হয়েছে। কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

অভিযোগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও তাঁর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অবগত নন বলে প্রথম আলোকে জানান। মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর ওপর হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম শামসুজ্জামান বলেন, ‘সারা দিন আমরা প্রার্থীসহ পটিয়ায় আছি। হামলার বিষয়ে কিছু জানি না।’

এর আগে মঙ্গলবার মনসা চৌমুহনীতে ঈগল প্রতীকের ব্যানার-পোস্টার ছেঁড়া, উত্তর হরিণ খাইন বটতলা এলাকায় প্রচারণার গাড়ি ভাঙচুর ও চালককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ আছে।