শাহ আরেফিন টিলার পাথর লুট ঠেকাতে বসানো হলো লোহার বেষ্টনী
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন টিলার পাথর লুট ঠেকাতে এবার সড়কে বসানো হয়েছে লোহার বেষ্টনী। ফলে পাথরবাহী যানবাহনগুলো বেষ্টনীতে আটকা পড়বে। রাস্তার দুই পাশেও নির্ধারিত উচ্চতায় লোহা দিয়ে আড়াআড়িভাবে ওপরের দিকও আটকানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন মোড়ে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ বেষ্টনী বসানো হয়।
এর আগে শাহ আরেফিন টিলা পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক। এ সময় তিনি টিলার পাথর লুটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে শাহ আরেফিন টিলা থেকে পাথর লুট ঠেকাতে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ। এতে শাহ আরেফিন টিলা মজুতকারী হিসেবে কয়েকজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সরকারি খাস খতিয়ানে ১৩৭ দশমিক ৫০ একর জায়গায় শাহ আরেফিন টিলার অবস্থান। কথিত আছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর অন্যতম সফরসঙ্গী হজরত শাহ আরেফিন (রহ.) খাসিয়া পাহাড় এলাকা পরিভ্রমণকালে পাহাড়-টিলার চূড়ায় বিশ্রাম নিতেন। শাহ আরেফিনের একটি ‘আসন’ (বিশ্রামের স্থান) হিসেবে পরিচিতি থেকে ওই টিলার নামকরণ হয়েছে শাহ আরেফিন টিলা। লালচে, বাদামি ও আঠালো মাটির এ টিলার নিচে রয়েছে বড় বড় পাথর। এসব পাথর উত্তোলন করতেই চলছে ধ্বংসযজ্ঞ। স্থানীয় মানুষেরা জানান, এরই মধ্যে টিলার প্রায় ৮৫ শতাংশ পাথর লুট হয়ে গেছে। টিলা কেটে লুট করা হয়েছে পাথরগুলো। এরপরও থামছে না পাথর লুট।
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন টিলা থেকে পাথর লুটপাটকারীরা যাতে পাথর লুট করে নিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য লোহার বেষ্টনী দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বড় যানবাহন ট্রাক, পিকআপ, ট্রাক্টর প্রবেশ করতে পারবে না। এতে পাথর লুট ঠেকানো যাবে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পাথর লুটকারীরা ভিন্নপথ তৈরি করে নিতে পারে। অন্য পথ দিয়ে পাথর নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রতন শেখ প্রথম আলোকে বলেন, লোহার বেষ্টনী দেওয়া ওই স্থানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে। সেখানে দিনে আনসার ও রাতে প্রহরী রাখা হবে। এ ছাড়া অন্য পথ দিয়ে যাতে পাথর নিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য পুলিশের টহল দল তৎপর থাকবে।