পদ্মায় বিষটোপ দিয়ে পাখি শিকার, কৃষকের বেশে অভিযানে ধরা পড়লেন শিকারি
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে বিষটোপ দিয়ে পাখি হত্যাকারীদের একজন ধরা পড়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজশাহী বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃত সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা নৌ পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ওই শিকারিকে চারটি পরিযায়ী পাখিসহ আটক করেন। পরে তাঁকে তিন দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই পাখিশিকারিকে ধরতে অভিযানে নামার আগে কৃষকের বেশ ধরেন সংশ্লিষ্টরা।
পাখিশিকারির নাম লিটন হোসেন (৪০)। বাড়ি রাজশাহী নগরের শ্রীরামপুর এলাকায়। তাঁকে আটকের সময় তাঁর কাছ থেকে বিষটোপ দিয়ে হত্যা করা তিনটি তিলগ হাঁস ও একটি পিয়ং হাঁস উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় ৩০০ মিটার জাল। লিটন হোসেনকে আটক করার পর নদীপাড়েই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁকে তিন দিনের কারাদণ্ড দেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিক জামান। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
নৌ পুলিশের রাজশাহী অঞ্চলের পরিদর্শক উজ্জ্বল হোসেন জানান, লিটন বিষটোপে পাখি হত্যা করে। ভোরে তিনি মৃত পাখি নিয়ে চর থেকে আসবেন, এমন খবর পেয়ে নৌ পুলিশ ও বন বিভাগের যৌথ অভিযান চালানো হয়। এ সময় চারটি মৃত পাতি তিলি হাঁসসহ হাতেনাতে আটক করা হয় ওই পাখিশিকারিকে। শিকারিকে ধরার জন্য ভোর থেকে কৃষকের পোশাক পরে অভিযানকারীরা মাঠে নেমেছিলেন।
বন বিভাগের বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির জানান, লিটন রাতে পদ্মার চরে বিষটোপ দেন। এই বিষটোপ খেয়ে পাখি মারা যায়। সকালে লিটন মৃত পাখি উদ্ধার করেন। এরপর চরেই মৃত পাখির গলা কাটা হয়। পরে এই মৃত পাখি নগরের বিভিন্ন হোটেল–রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করা হয়। কেউ যাতে সন্দেহ না করে, সে জন্য লিটন কারেন্ট জাল নিয়ে মাছ ধরার নাম করে নদীতে নামতেন। কিন্তু তাঁর আসল কাজ ছিল বিষটোপে পাখি হত্যা করা।
প্রতিবছর শীত মৌসুমে রাজশাহীর পদ্মা নদীর চরে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি আসে। রাজশাহী নগরের পাঁচ-ছয়জন শিকারি এই চর থেকে পরিযায়ী পাখি শিকার করেন। তাঁরা ব্যবহার করেন বিষটোপ। এই বিষটোপ খেয়ে অনেক পাখি মারা যায়। মৃত পাখি পড়ে থাকে পদ্মার চরে। ৯ জানুয়ারি শ্রীরামপুর এলাকার এক শিকারির বাড়ি থেকে ৯টি জবাই করা চখাচখি পাখি উদ্ধার করে বন বিভাগ। তবে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিকারি পালিয়ে যান।