বঙ্গোপসাগরে ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় নিখোঁজ আরও ২ জেলের লাশ উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া একটি ট্রলারে জলদস্যুদের হামলায় জীবন বাঁচাতে সাগরে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার ১২ দিন পর আজ বুধবার দুপুরে গভীর বঙ্গোপসাগরের ১ নম্বর বয়া-সংলগ্ন এলাকা থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় এখনো তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
লাশ উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন ওই ট্রলারের মাঝি বরগুনার তালতলী উপজেলার চামুপাড়া গ্রামের কাইউম জোমাদ্দার (৩৫) ও সদর উপজেলার চরগাছিয়া এলাকার জেলে আবুল কালাম (৫৫)। জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী সন্ধ্যায় বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন ফরিদ মিয়া (২৮), খাইরুল ইসলাম (২৬), আবদুল আলীম (২২)। তাঁদের বাড়ি সদর ও তালতলী উপজেলায়।
জেলেদের স্বজন ও ট্রলার মালিক সমিতির নেতারা জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য বন্দর থেকে বরফ, জ্বালানি ও বাজার-সদাই নিয়ে বঙ্গোপসাগরে গভীরে মাছ ধরতে যান জেলেরা। ‘এফবি ভাই ভাই’ নামের ট্রলারটি কুয়াকাটা থেকে ২০০ কিলোমিটার গভীরে সাগরে গেলে রাত দেড়টার দিকে অন্য একটি ট্রলার নিয়ে জলদস্যুরা অতর্কিতে হামলা করে। এ সময় দস্যুরা ট্রলারের সব জেলেকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে দস্যুরা। তখন আতঙ্কে ৯ জেলে সাগরে ঝাঁপ দেন। ডাকাতেরা ট্রলারে লুটপাটের পর ইঞ্জিনের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেলে ট্রলারটি সাগরে ভাসতে থাকে। পরদিন অন্য আরেকটি ট্রলারের সাহায্যে আহত জেলেরা তীরে ফিরে আসেন। এ ঘটনার চার দিন পর নিখোঁজ ৯ জেলের মধ্যে সাগরে ভাসমান অবস্থায় ৪ জেলেকে উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় অসুস্থ হয়ে আবদুর রব নামের এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। আজ বিকেলে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পাথরঘাটার মাছ ব্যবসায়ী ছগির হালদারের বরাত দিয়ে জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ছগিরের মালিকানাধীন ‘এফবি তুফান-২’ ট্রলারের জেলে আবদুর রব সাগরে মাছ ধরা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে পাথরঘাটায় এনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। আবদুর রবের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া গ্রামে।
পাথরঘাটা থানার উপপরিদর্শক আবদুল জলিল বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যে জেলের মৃত্যু হয়েছে, তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। জেলের স্বজনেরা এলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সাগরে দুই জেলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সদর থানার পুলিশ বলতে পারবে।