দুপচাঁচিয়ায় মিছিলে হামলার পর বিএনপি নেতা-কর্মীদের ‘গায়েবি’ মামলায় গ্রেপ্তারের অভিযোগ
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বিএনপির মিছিলে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের হামলার পর ‘গায়েবি’ মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপচাঁচিয়া উপজেলা বিএনপির বিক্ষোভ-সমাবেশে হামলা চালানো হয় বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এরপর গতকাল ও আজ মঙ্গলবার দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিএনপির ছয় নেতা-কর্মীকে বাড়ি থেকে আটক করেছে। আটক নেতা-কর্মীদের গত নভেম্বরে হওয়া বিস্ফোরক মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীরা হলেন পশ্চিম বড়াইগ্রামের বাসিন্দা দুপচাঁচিয়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল হক তালুকদার ওরফে কাজল (৫০), বাজারদীঘি গ্রামের বাসিন্দা দুপচাঁচিয়া উপজেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, চকসুখানগাড়ী থানাপাড়ার বাসিন্দা বিএনপি কর্মী আবু রায়হান ওরফে রাহিম (২৮), টেমা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি কর্মী বিপ্লব হোসেন (৩২), কাথহালী শিপুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি কর্মী জিয়াউল হক ওরফে জিয়া (৩৫), মাটাই ফকিরপাড়ার বাসিন্দা বিএনপি কর্মী আবদুল মজিদ (৬০) এবং মহলদারপাড়ার বাসিন্দা বিএনপি কর্মী বুলবুল (৩২)। তাঁদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমকে আজ এবং অন্যদের গতকাল নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটক নেতা-কর্মীদের গত নভেম্বরে হওয়া বিস্ফোরক মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ২৩ নভেম্বর দুপচাঁচিয়া থানায় হওয়া তদন্তাধীন একটি মামলায় বিএনপির ছয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এজাহারে নাম না থাকলেও তদন্তে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এ কারণে তাঁদেরকে আটক করে মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবি এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল দুপচাঁচিয়া উপজেলা বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। প্রথমে মেইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ কর্মসূচি দেওয়া হলে সেখানে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ-যুবলীগ বাধা দেয়। পরে উপজেলা সদর থেকে খানিকটা দূরে ধাপেরহাট এলাকায় কর্মসূচি পালন করতে চাইলে সেখানেও বাধা দেওয়া হয়। শেষে থানা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সমবেত হলে সেখানে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আহম্মেদুর রহমান লাঠি হাতে বিএনপির কর্মসূচিতে অতর্কিত হামলা করেন। হামলায় কল্লোল নামের বিএনপির এক কর্মী আহত হন। এ সময় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ একজোট হয়ে কর্মসূচিতে বাধা দেয়। কোনোরকমে কর্মসূচি শেষ করে নেতা-কর্মীরা বাড়িতে ফিরে যান। রাত থেকে শুরু হয় পুলিশের ধরপাকড়। গতকাল রাতে পাঁচজন এবং আজ একজনকে বাড়ি থেকে আটক করে গত নভেম্বরে রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের আগে থানায় করা ‘গায়েবি’ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে দুপচাঁচিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আহম্মেদুর রহমান বলেন, বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। মিছিলে হামলা হলে কেউ আহত হতেন, হাসপাতালে ভর্তি করতে হতো। এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন দল। হামলার গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।