ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশে হামলায় যাঁরা আহত, তাঁদেরই আসামি করে মামলা করল পুলিশ

সমাবেশের জন্য বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। গতকাল বিকেলে ফরিদপুর শহরের স্বাধীনতা চত্বরে
ফাইল ছবি

ফরিদপুরে গতকাল রোববার বিএনপির সমাবেশে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগের হামলায় কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ ফকির বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে পুলিশের ওপর হামলা করে চার-পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে আহত করা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, গতকাল বিকেলে পুলিশের ওপর বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে যাঁদের শনাক্ত করা গেছে, মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে। ভিডিওতে যাঁদের চেনা সম্ভব হয়নি, তাঁদের পরিচয় খোঁজা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

মামলায় শহীদুল ইসলাম ছাড়াও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক নায়াব ইউসুফ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়াসহ ফরিদপুর জেলা বিএনপির প্রথম সারির নেতাদের আসামি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ এখন আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নাই। তারা সন্ত্রাসীদের লালনকারী বাহিনী হয়ে উঠেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির সমাবেশে হামলা চালিয়ে নেতা-কর্মীদের পিটিয়েছে পুলিশ। তারা বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা দেবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন পুলিশের বিরুদ্ধে না, সরকারের বিরুদ্ধে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, দ্রব্যমূল্য কমানো, পাচার হয়ে যাওয়া টাকা বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য জনগণের দাবির সমর্থনে এ আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন হামলা-মামলা দিয়ে দমন করা যাবে না।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, গতকাল বিকেলে কোর্টপাড়া এলাকায় স্বাধীনতা চত্বরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেন। তাঁরা পুলিশের ওপর ইট ছুড়ে মারেন। এতে চার-পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ছাড়া পুলিশের একটি গাড়ির কাচ ভাঙা হয়। সে কারণে মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল ফরিদপুরের স্বাধীনতা চত্বরে সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সমাবেশে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগের হামলায় কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তাঁরা বর্তমানে বাড়িতে এবং কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকায় অবস্থান করছেন।