আট জেলায় সিইউএফএলের সার সরবরাহ বন্ধ
বকশিশের নামে গুদামশ্রমিকদের বাড়তি টাকা চাওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রামসহ আটটি জেলায় সার পরিবহন ও সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা লিমিটেডের (সিইউএফএল) ডিলাররা। ডিলারদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সিদ্ধান্তে আজ শুক্রবার সকাল থেকে সার পরিবহন বন্ধ রয়েছে। সংকট সমাধানে আগামীকাল শনিবার সকালে বাফা নেতাদের সঙ্গে সিইউএফএলের কর্মকর্তাদের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
সারা দেশে সিইউএফএলের ২৮টি গুদাম থেকে সার সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামসহ আশপাশের আটটি জেলায় সার সরবরাহ করা হয় সিইউএফএল কারাখানা ও কালুরঘাটে অবস্থিত দুটি গুদাম থেকে। চট্টগ্রাম ছাড়া বাকি জেলাগুলো হলো কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর।
বাফা সূত্রে জানা গেছে, গুদাম থেকে সার ট্রাকে তোলার জন্য নিয়োজিত শ্রমিকদের ঠিকাদারের মাধ্যমে নিয়োগ দেয় সিইউএফএল। তাঁদের মজুরিও ঠিকাদারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। তবে সার ট্রাকে তোলার পর শ্রমিকদের বকশিশ দেওয়ার রীতি রয়েছে। এত দিন ধরে ডিলাররা ১০০ টাকা করে শ্রমিকদের বকশিশ দিতেন। তবে সম্প্রতি প্রতি ট্রাকের বিপরীতে সিইউএফএল গুদামে ৬০০ টাকা ও কালুরঘাট গুদামে ২ হাজার ২০০ টাকা বকশিশ দাবি করছেন শ্রমিকেরা।
বাফার সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল আলম খান এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে গত ২৭ জুলাই সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি আবেদন করেন। এরপরও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বৈঠক করে গুদাম থেকে সার সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি।
বাফার সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রামসহ আট জেলার শতাধিক ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ সার পরিবহন ও সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সংকটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সার পরিবহন বন্ধ থাকবে।
সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সার পরিবহনে চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই, করণীয় নির্ধারণে আগামীকাল বাফার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, প্রতি ট্রাকে ৮–১০ টন সার বহন করার কথা। তবে এর বেশি পরিবহন করার কারণে হয়তো শ্রমিকেরা বাড়তি টাকা দাবি করছেন।
১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পারে আনোয়ারা উপজেলায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকলে কারখানাটির দৈনিক ১ হাজার মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া ও ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।