দুই সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বই পৌঁছে যাবে: শিক্ষামন্ত্রী

কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। রোববার দুপুরে সৈকতের একটি হোটেলের বলরুমে
ছবি: প্রথম আলো

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, বিশ্বজুড়ে সংকট ও অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। যে কারণে কাগজের সংকট ছিল। বছরের মাঝামাঝিতে বিদ্যুতেরও সংকট দেখা দেয়। এতে ছাপাখানাগুলো অনেক ঝামেলার মধ্যে পড়ে যায়। তা সত্ত্বেও বছরের প্রথম দিন প্রাথমিকে ৮০ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের বেশি বই শিশুদের তুলে দেওয়া গেছে। বাকি ২০ শতাংশ অর্থাৎ শতভাগ বই আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পৌঁছে যাবে।

আজ রোববার দুপুরে কক্সবাজার সৈকতের একটি হোটেলের বলরুমে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

‘ন্যানো-বায়ো অ্যান্ড অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং (এনএএমই-২০২৩)’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কেমিকৌশল (সিএইচই) বিভাগ।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষক প্রয়োজন, তা হলে দেশের টেকসই উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য আরও বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণা বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

দীপু মনি আরও বলেন, ‘হয়তো অর্থনীতিতে আমরা ধনী দেশ হতে পারিনি, তবে মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছি। তাই আমরা মানবিক বাংলাদেশ। সেই মানবিকতাকে বজায় রেখে সৃজনশীলতা নিয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হতে চাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে সেটি সম্ভব।’

সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাপানের টোহুকো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাদাহিরু কমেদা এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসাইন।

সভাপতিত্ব করেন কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান জাভেদ হোসেন খান। সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ ও সাইয়েদ এমদাদুল হোসাইন।

উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ন্যানো প্রযুক্তি এখন সারা বিশ্বে পরিচিত। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রযুক্তির ওপর দীর্ঘদিন কাজ করছে। আমরা দেখিয়েছি “ন্যানো ইজ বিউটি, ন্যানো ইজ পাওয়ার।”’

টোহুকো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাদাহিরু কমেদা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা খুবই পরিশ্রমী। জাপানে তাঁরা এ পরিশ্রমের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর দেশে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

যবিপ্রবির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ দেশ–বিদেশের প্রায় ২৫০ শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও গবেষক অংশ নেন।

তাঁরা ‘অ্যাডভান্স ম্যাটেরিয়ালস ফর এনার্জি, ফুড সেফটি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ন্যানো ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ফটোনিকস, ন্যানো–টেকনোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স, বায়ো ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ১৫২টি প্রবন্ধ ও পোস্টার উপস্থাপন করেন।

দেশ–বিদেশের শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও গবেষকদের মধ্যে গবেষণার যোগসূত্র ও মেলবন্ধন তৈরির উদ্দেশ্যে পৃথিবীর বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত শহর কক্সবাজারে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনের শেষে যবিপ্রবির সঙ্গে মালয়েশিয়ার সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে যবিপ্রবির পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ার হোসেন ও সানওয়ের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. সিব্রান্দেস পপ্পেমা সই করেন। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি উপস্থিত ছিলেন।