নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের প্রাণ বল্লভের দই
ছবি: প্রথম আলো

৭৩ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে প্রাণ বল্লভের কাঁচা ছানা ও দইয়ের সুনাম। পছন্দের কারণে মিষ্টিপ্রেমীরা নিজেরা খান, বিশেষ উৎসব কিংবা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে এই দই ও মিষ্টি নিয়ে যান।

১৯৫০ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ বাজারে মাঠা, রসগোল্লা ও কাঁচা ছানা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন প্রাণ বল্লভ ঘোষ। তাঁর বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জের আজিবপুর গ্রামে। ‘আদি প্রাণ বল্লভ মিষ্টান্ন ভান্ডার’ নামে মিষ্টির দোকানে শুরুতে তিনি রসগোল্লা, পরোটা, ভাজি, হালুয়া, টক ও মিষ্টি দই বিক্রি করতেন। ১৯৯৩ সালে ৮৫ বছর বয়সে প্রাণ বল্লভ ঘোষ মারা যান। তাঁর পাঁচ ছেলে নিত্য গোপাল ঘোষ, যদু গোপাল ঘোষ, মধুসূদন ঘোষ, বাবুল চন্দ্র ঘোষ ও পরিমল চন্দ্র ঘোষ। এর মধ্যে নিত্য গোপাল ঘোষ মারা গেছেন। অন্য চারজন ব্যবসা দেখেন। নারায়ণগঞ্জে এখন তাঁদের চারটি মিষ্টির দোকান।

আরও পড়ুন

ফরিদপুরের বাগাটের দই একবার খেলে স্বাদ মুখে লেগে থাকে

মিষ্টি বানানোর জন্য মালিকপক্ষ সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জসহ বিভিন্ন খামার থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি দুধ সংগ্রহ করে। সেই দুধ দিয়ে মিষ্টি ও দই বানানো হয়। টক দই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা ও মিষ্টি দই ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। কেজিপ্রতি কাঁচা ছানা ৬০০ টাকা, পানতোয়া ৫০০, রসগোল্লা ৫০০, মিল্কশেক ৭০০, কালোজাম ৩০০, চমচম ৩২০, লাড্ডু ৪০০, সন্দেশ ৪০০ ও রসমালাই ৪৫০ টাকা।

আরও পড়ুন

বদলগাছির ‘দাদুর সন্দেশ’ মন ভোলায় সবার

দই কিনতে আসা শহরের চাষাঢ়া এলাকার বাসিন্দা আল আমিন বলেন, প্রাণ বল্লভের দই খেতে পছন্দ করেন তাঁরা। সুযোগ পেলেই পরিবারের জন্য দই ও মিষ্টি কিনে নিয়ে যান।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের প্রাণ বল্লভের কাঁচা ছানা পরে কেটে বিক্রি করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, প্রাণ বল্লভের মিষ্টি ও দইয়ের সুনামের কারণে মিষ্টি কিনতে এখানে অনেকেই ভিড় করেন। কাঁচা ছানা কম মিষ্টি হওয়াতে খেতে দারুণ। সব বয়সীরা এই ছানা খেতে পছন্দ করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন এখানে এসে দই-মিষ্টি কিনে নিয়ে যান।

আরও পড়ুন

মুখে ও হাতে লেগে থাকে যে দই

সিদ্ধিরগঞ্জপুলে অবস্থিত প্রাণ বল্লভ সুইটের মালিক পরিমল চন্দ্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, দুধ ভালোভাবে আগুনে জ্বাল দিয়ে পরিমাণমতো চিনি দিতে হয়। পরে হালকা ঠান্ডা করে দুধে আগের একটু দই দিতে হয়। সেই দইয়ের হাঁড়ি চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ভারী কিছু দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। এভাবে দই হয়।

আরও পড়ুন

স্বাদে-মানে অনন্য নওগাঁর প্যারা সন্দেশ

কাঁচা ছানা তৈরির বিষয়ে পরিমল চন্দ্র ঘোষ বলেন, আগে দেশি গাভির দুধ দিয়ে তৈরি মিষ্টি ও দইয়ের স্বাদই অন্য রকম হতো। এখন দেশি গাভির দুধ মেলে না। খামারের গরুর দুধে সেই স্বাদ ও ঘ্রাণ নেই। তাঁরা মান নিয়ে আপস করেন না বলে সবাই তাঁদের দই-মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন।