চার দিন পর বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক ধর্মঘট প্রত্যাহার

চার দিন ধর্মঘটের পর শ্রমিকেরা কাজে ফিরেছেন। বুধবার সকাল ১০টার দিকে বুড়িমারী স্থলবন্দরে
ছবি: প্রথম আলো

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে চার দিন পর শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে শ্রমিকেরা কাজে ফিরেছেন। ধর্মঘটের কারণে গত শনিবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চার দিন মালামাল ওঠানো–নামানো বন্ধ ছিল।

আজ সকালে শ্রমিক প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী (খালিদ মাহমুদ চৌধুরী) মহোদয় বলেছেন স্থলবন্দর সচল রাখতে। তাই শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার পর আজ তাঁরা কাজে যোগ দিয়েছেন।’

আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, স্থলবন্দর ইয়ার্ডের শেড, মাঠ ও সড়কজুড়ে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক বিচ্ছিন্নভাবে দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাকগুলো থেকে মাল খালাসের জন্য চালক ও শ্রমিকেরা অপেক্ষা করছেন।

গতকাল সন্ধ্যায় বুড়িমারী স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সেখানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের আন্দোলন ও দাবি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি। শ্রমিকেরা তাঁদের সঠিক অধিকার না পাওয়ায় কাজ বন্ধ রেখেছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরে গঠিত ট্রেড ইউনিয়নগুলো সঠিকভাবে গঠিত হলে এবং কাজ করলে শ্রমিকদের এমন আন্দোলন করার কথা নয়।’

বুড়িমারী স্থলবন্দরে অচলাবস্থার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানকে। কমিটি গত রোববার শ্রমিকদের প্রতিনিধিদল ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুজ্জামানকে নিয়ে বৈঠক করে। শ্রমিক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিক লীগ শাখার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন।

বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস পাওয়া গেছে।

১২ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের মজুরির টাকা না দেওয়া এবং সাধারণ শ্রমিকদের কাজের সিরিয়াল দেওয়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও সরদারপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ সময় পাটগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলামসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন শ্রমিকেরা।

পরে ওই দিন সন্ধ্যায় প্রশাসনের উদ্যোগে শ্রমিক প্রতিনিধি, সরদার ও ঠিকাদারদের নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ১৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ওই দিন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আলোচনায় শ্রমিক প্রতিনিধিরা অংশ নেননি। পরে সেই দিন থেকেই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছিলেন শ্রমিকেরা।