গাজীপুর কারাগারে ‘আয়নাবাজির’ ঘটনায় আদালতে মামলা, আইনজীবীকে শোকজ

প্রকৃত আসামি সাত্তার মিয়ার (বাঁয়ে) স্থলে টাকার বিনিময়ে জেল খাটছেন সাইফুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে জেল খাটার ঘটনায় আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গাজীপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।

এ ছাড়া প্রকৃত আসামির পরিবর্তে অন্য ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করায় এক আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন কালিয়াকৈর উপজেলার মোথাজুরী তালচালা গ্রামের ছাত্তার মিয়া (৪৫) ও তাঁর পরিবর্তে কারাগারে থাকা একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৩০)।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার কাচিঘাটা রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা আবু শরীফ উর রহমান খান চৌধুরী গত ২৪ নভেম্বর ছাত্তার মিয়া, বাবুল হোসেন, মো. ছামাদ ও মো. হানিফের বিরুদ্ধে বন আইনে একটি মামলা করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ৭ ডিসেম্বর গাজীপুর জজ আদালতের আইনজীবী শ্যামল সরকার আসামি ছাত্তার মিয়ার পক্ষে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে গত ৮ ডিসেম্বর গাজীপুর জেলা কারাগারে আসামির আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিস পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, কারাগারে যাওয়া আসামি ছাত্তার মিয়ার প্রকৃত নাম জাতীয় পরিচয়পত্রে সাইফুল ইসলাম। প্রকৃত আসামির নাম ও পরিচয় গোপন করায় অভিযুক্ত ছাত্তার মিয়া, সাইফুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পেনাল কোডের ১৯৬/২০৫/৪১৭/ ৪২০/৪৬৬/৪৬৮ ধারায় অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আসামি ছাত্তার মিয়ার পক্ষে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট আইনজীবী শ্যামল সরকারকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

গাজীপুর বন আদালতের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জুয়েল রানা বলেন, আদালতে মামলা করা হলে বিচারক সংশ্লিষ্ট থানায় এআইআর করার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া আইনজীবীকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের বলেন, ‘ওই আসামিকে আমাদের কারাগারে পাঠানো হলে তাঁর আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিস নেওয়া হয়। আসামি ছাত্তারের ছাপ নেওয়ার সময় দেখা যায়, তাঁর প্রকৃত নাম সাইফুল ইসলাম। পরে জানতে পারি, তিনি অন্যজনের হয়ে আদালতে হাজির হয়েছিলেন। পরে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছি।’

ওই ঘটনায় মঙ্গলবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘গাজীপুর কারাগারে ‘আয়নাবাজি’: টাকার বিনিময়ে কারাগারে যুবক, বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকৃত আসামি’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়।