এবার সাংবাদিককে ‘হাড্ডি’ ভাঙার হুমকি দিলেন সাবেক এমপি, আদালতে মামলা
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিককে মেরে হাড্ডি ভেঙে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে নালিশি মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বাঁশখালীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদের আদালতে মামলাটি করেন বাঁশখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি শফকত হোসাইন চাটগামী। তিনি স্থানীয় দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চের বাঁশখালী উপজেলা প্রতিনিধি।
বাদীর আইনজীবী মোশাররফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বাদীর অভিযোগটি তদন্তের জন্য বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে গালাগাল করতে থাকেন সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানতে চান, তাঁর বিরুদ্ধে এসব কী লিখেছেন পত্রিকায়। তখন সাংবাদিক শফকত চাটগামী বলেন, বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর তাঁর বক্তব্যে যা বলেছেন, তা–ই লেখা হয়েছে। তখন সাবেক এমপি সাংবাদিককে মেরে হাড্ডি ভেঙে ফেলার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে জানতে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
২৯ জুন উপজেলা সদরে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বক্তব্যে আবদুল গফুর কার্যালয় নির্মাণে সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে চাঁদা নেন বলে অভিযোগ করেন। পরদিন কয়েকটি গণমাধ্যমে গফুরের অভিযোগসংবলিত বক্তব্যটি দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সাংবাদিক ছাড়াও একই ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুরের ‘হাড্ডি’ ভেঙে ফেলবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। মুঠোফোনে আবদুল গফুরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠেছে। মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি পৌর সদরে নির্মাণ করা হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এই কার্যালয় নির্মাণ শুরু হয়। এক বছর আগে কার্যালয়টির উদ্বোধন করা হয়। কার্যালয় করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও নেতাদের কাছ থেকে চাঁদা নেন বলে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে ২০১৪ সাল থেকে টানা দুবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমানের কাছে পরাজিত হন। অবশ্য ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে নির্বাচন কমিশন মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করে। এর আগে বাঁশখালী থানা কার্যালয়ে হাজির হয়ে মোস্তাফিজুর ওসি তোফায়েল আহমদের দিকে তেড়ে যান। এ কারণে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল। তবে নির্বাচনে মুজিবুর রহমান ৫৭ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন।
মোস্তাফিজুর রহমানের কটূক্তি এবার প্রথম নয়। এর আগে মোস্তাফিজুর রহমান সংসদ সদস্য থাকার সময় দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়েও কটূক্তি করেন। তখনো গাড়িতে বসে করা কটূক্তির ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ছাড়া প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে মিছিল করেও সমালোচিত হন তিনি।