পর্যটকদের নতুন গন্তব্য রাঙামাটির সাগরবান্ধাছড়া, একসঙ্গে দেখা যায় অনেক ঝরনা
রাঙামাটির সদর উপজেলার বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের চারিহং গ্রামে অবস্থিত সাগরবান্ধাছড়া। এ ছড়াতেই অবস্থিত ঝরনাগুলো। এর মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড় ঝরনাটির নামও সাগরবান্ধা। তবে একে অনেকে চেনেন চারিহং ঝরনা নামে।
আড়াই শ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে ঝরনার পানি। আশপাশে বইছে ঠান্ডা বাতাস। চারপাশে সবুজে ঘেরা এই মনোরম ঝরনা মুহূর্তেই মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। ঝরনাটি দেখতে যাওয়ার পথও বেশ রোমাঞ্চকর। এটি দেখতে যাওয়ার পথেই আশপাশে দেখা মেলে আরও অন্তত সাতটি ঝরনার।
রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের চারিহং গ্রামে অবস্থিত সাগরবান্ধাছড়া। এ ছড়াতেই অবস্থিত ঝরনাগুলো। এর মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড় ঝরনাটির নামও সাগরবান্ধা। তবে একে অনেকে চেনেন চারিহং ঝরনা নামে। সাগরবান্ধা ঝরনাটি এখনো খুব বেশি পরিচিত নয় দূর-দূরান্তের পর্যটকদের কাছে। এটি দেখতে যাওয়া পর্যটকদের বেশির ভাগই জেলার নানা এলাকার।
রাঙামাটি শহর থেকে নৌপথে যেতে হয় চারিহং গ্রামে। সুবলং ঝরনায় যাওয়ার আগে বাঁ পাশে একটি নৌপথ রয়েছে, যেটি দিয়ে যেতে হয় গ্রামটিতে। রাঙামাটি শহর থেকে যেতে সময় লাগে পৌনে এক ঘণ্টার মতো। চারিহং গ্রামের পৌঁছার আগে অদূরে দেখা যায় সাগরবান্ধাছড়ার প্রথম ঝরনাটি। ঝরনার পানি কাপ্তাই হ্রদে মিশেছে। মূলত এই স্থান থেকেই সাগরবান্ধা ঝরনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু। এরপর পুরোটা পথ যেতে হয় সাগরবান্ধাছড়া হয়ে। ছড়ার পথ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। পিচ্ছিল পাথর মাড়িয়ে সতর্ক পা ফেলতে হয়।
এখন বৃষ্টির কারণে পানিতে টইটম্বুর পাহাড়ি ছড়া। ঝরনাগুলোও হয়ে উঠেছে অপরূপ। তাই এসব ঝরনা দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকেরাও। গত শুক্রবার রাঙামাটি শহর থেকে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল ঘুরতে যান সাগরবান্ধা ঝরনায়। দলের সদস্য বাবলু চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাগরবান্ধাছড়ায় গেলে একসঙ্গে অন্তত ৭-৮টি ঝরনা দেখা যায়। সাগরবান্ধা ঝরনাটি অন্যান্য ঝরনার চেয়ে একেবারে ভিন্ন। খুব সুন্দর এই ঝরনায় একবার গেলে বারবার যেতে ইচ্ছে করে।’
চারিহং গ্রামের শান্ত চাকমা বলেন, সাগরবান্ধাছড়ার খবর শুনে এখন প্রায়ই পর্যটকেরা আসছেন। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটক বেশি আসছেন। তবে পর্যটকদের অনেকে পলিথিনসহ নানা বর্জ্য ছড়ায় ফেলে যান। বিষয়টি নিয়ে পর্যটকদের আরও সচেতন হওয়া উচিত।
রাঙামাটি শহর থেকে নৌপথে যেতে হয় চারিহং গ্রামে। সুবলং ঝরনায় যাওয়ার আগে বাঁয়ে একটি নৌপথ রয়েছে, যেটি দিয়ে যেতে হয় গ্রামটিতে। রাঙামাটি শহর থেকে যেতে সময় লাগে পৌনে এক ঘণ্টার মতো। চারিহং গ্রামের পৌঁছার আগে অদূরে দেখা যায় সাগরবান্ধাছড়ার প্রথম ঝরনাটি।
বন্দুকভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বরুণ কান্তি চাকমা বলেন, চারিহং গ্রামের পাশে সাগরবান্ধাছড়ায় বেশ কিছু ঝরনা রয়েছে। সেখানে পর্যটকেরা যাওয়া শুরু করেছেন। তবে পর্যটকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এখনো সেখানে নিশ্চিত করা যায়নি।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম থেকে যেকোনো বাসে চড়ে প্রথমে পৌঁছাতে হবে রাঙামাটি। এরপর ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করতে হবে। রাঙামাটি শহরের যেকোনো ঘাট থেকে রাঙামাটি-সুবলং নৌপথ হয়ে পৌঁছাতে হবে চারিহং গ্রামে। গ্রামটি ঘেঁষে সাগরবান্ধা ঝরনাগুলোর অবস্থান। নৌকার আঁকার অনুযায়ী দেড় হাজার টাকা থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া লাগবে। গ্রামটিতে পর্যটকদের খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই সারা দিনের খাবারসহ সব প্রস্তুতি নিয়ে গেলে ভালো।
সাগরবান্ধাছড়ায় গেলে একসঙ্গে অন্তত ৭-৮টি ঝরনা দেখা যায়। সাগরবান্ধা ঝরনাটি অন্যান্য ঝরনার চেয়ে একেবারে ভিন্ন। খুব সুন্দর এই ঝরনায় একবার গেলে বারবার যেতে ইচ্ছে করে।বাবলু চাকমা, পর্যটক
কোথায় থাকবেন
রাঙামাটি শহরে পর্যটন মোটেল, হোটেল মতিমহল, হোটেল নাদিয়া, হোটেল প্রিন্স, হিল প্যালেস, হোটেল ডিগনিটি, হোটেল সুফিয়াসহ অন্তত ৫০টি হোটেল রয়েছে। এ ছাড়া কাপ্তাই হ্রদে নতুন করে গড়ে ওঠা রাঙাদ্বীপ রিসোর্ট, বার্গী রিসোর্টসহ অসংখ্য কটেজ রয়েছে। এসব আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টে থাকতে ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে।