কুমিল্লায় টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন তৈরি, ইউপি সচিব গ্রেপ্তার
কুমিল্লায় রোহিঙ্গা যুবকের জন্য ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরির অভিযোগে মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিবকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম মো. ইসমাইল। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার গুনাইনন্দী গ্রামের বাসিন্দা। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেস বড়ুয়া বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এক রোহিঙ্গা যুবককে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইসমাইল।
চলতি বছর জানুয়ারিতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসেন মো. ইয়াছিন নামের ওই রোহিঙ্গা তরুণ। তিনি মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। কক্সবাজারের বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-৯–এ থাকতেন তিনি। মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে জন্মনিবন্ধন তৈরি করে নেন তিনি। পরে ওই জন্মনিবন্ধন নিয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে যান মো. ইয়াছিন। এ সময় কর্মকর্তাদের সন্দেহ হলে ইয়াছিনকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, পাসপোর্ট বানানোর জন্য কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস–সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামের দুই দালালের সঙ্গে চুক্তি করেন ইয়াছিনের চাচাতো ভাই উসমান। পরে চুক্তি অনুযায়ী ওই ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে ইয়াসিনের জন্মনিবন্ধনসহ অন্য কাগজপত্র তৈরি করে দেন তাঁরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, বৈধভাবে অনেকেই জন্মনিবন্ধন বানাতে পারেন না। তবে পর্যাপ্ত টাকা হলে ইউপি সচিব যে কারও অসংগতিপূর্ণ ঠিকানার জন্মনিবন্ধন বানিয়ে দিতে পারতেন। এমন কাজে সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজের জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ (এটন) বলেন, ‘রোহিঙ্গা যুবককে জন্মনিবন্ধন বানিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি সঠিক নয়। আইডি হ্যাক হয়েছে। বিষয়টি আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’
ইউপি সচিবকে গ্রেপ্তারের কারণে সেখানে পরিষদের কাজ চালু রাখার জন্য ভারপ্রাপ্ত এক সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানান মুরাদনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন।