প্রতিদিন গড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৩৭ জন

গতকাল বুধবার পর্যন্ত নভেম্বর মাসে ১৯ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৭০৪ জন।

ডেঙ্গু মশাপ্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে গত অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৯০ জন। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩২ জন। আর চলতি নভেম্বর মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ জন করে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত নভেম্বর মাসে ১৯ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৭০৪ জন। সংখ্যা হিসেবে এটি গত তিন মাসের তুলনায় কম। তবে প্রতিদিনের গড় হিসাবে এটি এ বছরের সর্বোচ্চ।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে পুরো বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ২০৯ জন। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। সবশেষ গত ১১ নভেম্বর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম নাদিয়া জান্নাত তাসকিয়া (১০)।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ মাসে আক্রান্তের সংখ্যা নগরে বেশি। গতকাল পর্যন্ত উপজেলাগুলোয় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩০২ জন। নগরে আক্রান্ত হয়েছে ৪০২ জন। উপজেলার মধ্যে চলতি বছর সবচেয়ে বেশি; ৮৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছে সীতাকুণ্ডে।

গত তিন বছরের হিসাবে প্রতিবছরই শীতের আগে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এ বছর জুনে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হলেও পরের মাসগুলোয় স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়।

এই বৃষ্টি ও উচ্চ তাপমাত্রা চলতি বছর ডেঙ্গুর বিস্তারে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন কীটতত্ত্ববিদেরা। চলতি মাসেও দুবার বৃষ্টি হয়েছে নগরে। এতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ডেঙ্গুর পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল ৪ হাজার ৩২৩ জন। এ বছর এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে শঙ্কা চিকিৎসকদের। ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের হিসাবেও দেখা গেছে, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ডেঙ্গুর রোগী বেড়েছে। মৃতের সংখ্যা এ বছর গতবারের তুলনায় কম। গত বছর নভেম্বর মাসেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। এ বছর নভেম্বরের প্রথম ১৯ দিনে মৃতের সংখ্যা দুই। 

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা সেবা নেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি), সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রাম, বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি হাসপাতালে। গতকাল এ সব হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩৪ জন ভর্তি ছিলেন।

চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, সাধারণত বৃষ্টি হওয়ার ২৮ দিন পর্যন্ত মশার প্রকোপ থাকে বলে ধারণা করা হয়। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। বৃষ্টির হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে।