স্ত্রী-শ্যালিকাকে হত্যার দায় স্বীকার করে আসামির জবানবন্দি, অন্য ব্যক্তির সঙ্গে স্ত্রীর প্রেমের সন্দেহ

আমির হোসেনছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্ত্রী ও শ্যালিকাকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার আমির হোসেন (২৮)। তাঁর দাবি, স্ত্রী জ্যোতি আক্তারের সঙ্গে অন্য ব্যক্তির প্রেমের সম্পর্ক চলছে—এমন সন্দেহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (চতুর্থ আদালত) আসমা জাহান তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন দাস।

আরও পড়ুন

গত রোববার রাতে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামে দুই বোন খুন হন। তাঁরা হলেন একই গ্রামের মৃত রওশন আলীর মেয়ে ও আমিরের স্ত্রী জ্যোতি আক্তার (২০) ও জ্যোতির বোন স্মৃতি আক্তার (১৪)। প্রায় দেড় বছর আগে জ্যোতির সঙ্গে আমিরের বিয়ে হয়। তিনি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনার পরপর পলাতক ছিলেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অবস্থান নিশ্চিত করে গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রামের বাঁকলিয়া এলাকা থেকে আমিরকে গ্রেপ্তার করে কসবা থানা-পুলিশ। গতকাল রাতেই জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্ত্রী-শ্যালিকাকে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি।

আমিরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাতে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন দাস জানান, ঘটনার পাঁচ-সাত দিন আগে সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি ধজনগর গ্রামে আসেন আমির। ওই সময় স্ত্রী জ্যোতিকে অন্য পুরুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন। বিষয়টি নিয়ে আমিরের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে রোববার রাতে জ্যোতির সঙ্গে আমিরের কথা হয়। ওই সময় স্বামীর কাছে ক্ষমা চান জ্যোতি। আমির শর্ত দেন, তাঁর সঙ্গে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার জামতলীতে নিজেদের বাড়িতে ফিরলে মাফ করবেন। কিন্তু জ্যোতি জানান, তিনি শ্বশুরবাড়িতে পরে যাবেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে আমির শ্বাসরোধে জ্যোতিকে হত্যা করেন।

শ্যালিকা স্মৃতিকে হত্যার বিষয়ে আমির জবানবন্দিতে জানান, স্ত্রীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও হত্যার ঘটনা দেখে শ্যালিকা সেখান থেকে পালিয়ে রান্নাঘরে চলে যায়। রান্নাঘরে গিয়ে শ্যালিকা স্মৃতিকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন আমির।

এ ঘটনায় পরদিন গত সোমবার কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন জ্যোতি ও স্মৃতির ভাই মোবারক হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাদের।