টিকটকে কিশোর–কিশোরীর প্রেম, দেখা করতে গেলে মেয়ের স্বজনেরা দিলেন বিয়ে
টিকটকে কিশোর–কিশোরীর পরিচয়, এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা একটি রেস্তোরাঁয় দেখা করতে যায়। একপর্যায়ে মেয়ের (১৫) স্বজনেরা সেখানে হাজির হন। পরে তাদের বাড়ি নিয়ে যান। ছেলের (১৫) স্বজনদের না জানিয়েই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের উপস্থিতিতে তাদের বাল্যবিবাহ দেওয়া হয়। পরে ছেলের এক বন্ধুর কাছ থেকে এ খবর পান তার স্বজনেরা। তাঁরা বিষয়টি থানায় জানান। গতকাল শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই কিশোর–কিশোরীকে উদ্ধার করে।
ছেলেটির বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় আর মেয়েটির বাড়ি পাশের জুড়ী উপজেলায়। ছেলেটি কুলাউড়ার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়েটি অষ্টম শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করেনি। এ ঘটনায় গতকাল রাতে ছেলের মা বাদী হয়ে জুড়ী থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বাদী বলেন, গত শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ছেলের সন্ধান পাচ্ছিলেন না। তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। ওই দিন রাতে ছেলের এক বন্ধু মুঠোফোনে তাঁদের জানায় তাকে সঙ্গে নিয়ে জুড়ী উপজেলা সদরের একটি রেস্তোরাঁয় মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। পরে মেয়ের স্বজনেরা সেখানে গিয়ে তাদের জোর করে বাড়ি নিয়ে যান। সেখানে ওই এলাকার ইউপি সদস্যের উদ্যোগে এক ইমাম দিয়ে ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেন। মুঠোফোনে ধারণ করা এসব ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সে ছেলের স্বজনদের কাছে পাঠায়।
গতকাল রাত ১১টার দিকে জুড়ীর জায়ফরনগর ইউনিয়নে মেয়েটির এক আত্মীয়ের বাড়িতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। সেখান থেকে ছেলে ও মেয়েকে উদ্ধার করে জুড়ী থানায় নেওয়া হয়। রাতেই ছেলের মা বাদী হয়ে মেয়ের বাবা, মা ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের নাম উল্লেখে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে মামলা করেন।
অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে স্থানীয় ইউপি সদস্য শরফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ছেলের বন্ধুর মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওতে জোর করে ছেলেকে ধরে নেওয়া ও ছেলে–মেয়েকে বাল্যবিবাহ করানোর দৃশ্য দেখা গেছে। ছেলে ও মেয়েকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে। আদালত তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন। আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।